ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কোন কাজটি শিখবো?

ফ্রিল্যান্সিং। কথাটি শোনার সাথে সাথে আমাদের মনে অনেক চিন্তা ভাবনা চলে আসে। কিভাবে কি করব কোন কাজ শিখব এবং কোথা থেকে শিখব। আদৌ কি এই কাজটির শিখে আমরা সফলতার মুখ দেখতে পারবো? সত্যি কথা বলতে এমন হাজারো প্রশ্ন আমাদের মনে সারাদিন ঘুরপাক খেতে থাকে। কোন কাজটি শিখবো এটি নিয়ে আজকে আমি তোমাদের কিছু কাজের কথা বলে দেবো যেগুলো তোমরা শিখতে পারো বর্তমান সময়ে অনেক বেশি জনপ্রিয়।

আমি এসব কাজ বলার পরও দেখবে অধিকাংশ মানুষ জিজ্ঞেস করবে ভাইয়া এগুলোর মধ্যে কোনটি শিখা ভালো হবে। আমরা যদি এই বিষয়টা সম্পর্কে অবগত থাকি যে কোন অভিজ্ঞতার ফ্রিল্যান্সারকে কখন প্রয়োজন হয় বা কখনো দরকার হয় সে জিনিসটা তাহলে আমরা সহজেই এটি অনুমান করতে পারবো আমাদের সামনে কোন কোন রাস্তা গুলো খোলা আছে।

মনে করুন একজন বিদেশী বায়ারের একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট প্রয়োজন। সেখানে তিনি তার প্রোডাক্ট সেল ও বিক্রি করবেন। এক্ষেত্রে তারা সর্বপ্রথম প্রয়োজন হবে একজন ওয়েব ডিজাইনার এর। ওয়েব ডিজাইনার ফ্রিল্যান্সার ওয়েবসাইটে ডিজাইন করে দিতে গেলে সেখানে প্রয়োজন হবে কিছু ছবি আইকন এবং অন্যান্য আরো অনেক বিষয়। এর জন্য সে আবারও অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে কে হায়ার করতে পারে একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার কে। যে তার ওয়েবসাইটের জন্য এসব তৈরি করে দেবে।

এরপর আবার ধরুন ওই ওয়েবসাইটে লেখালেখি কনটেন্ট প্রয়োজন। প্রডাক্ট দেস্ক্রিপশন প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে আবার একজন কনটেন্ট রাইটার কে হায়ার করতে হবে।

এরপর সেই ওয়েবসাইটটি সবার কাছে পরিচিত করার জন্য প্রয়োজন একজন ডিজিটাল মার্কেটিং সদস্যকে। যে ওই ওয়েবসাইটের সম্পূর্ণ এসইওর কাজ করবে। ওয়েব সাইটে বিভিন্ন ভিডিও বিজ্ঞাপন তৈরি করতে হলে দরকার পড়বে ভিডিও এডিটর। সেই ক্ষেত্রে আমার আর একজন ফ্রিল্যান্সারকে হায়ার করবে।

একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করেছে অবশ্যই তার জন্য একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের প্রয়োজন হবে যেটার মাধ্যমে সহজেই মানুষ সেই অ্যাপ্লিকেশন থেকে পণ্য কিনতে পারে। সেজন্য আবার একজন দরকার অ্যাপ ডেভলপার কে যে এই ওয়েবসাইটের জন্য একটি সুন্দর অ্যাপ বানিয়ে দেবে। এরপর বায়ারের অফিসে অনেক কর্মচারী এসব হিসাবপত্র করার জন্য কম্পিউটারে কাজ করবেন আর সেজন্য প্রয়োজন হবে হিসাবপত্র করার মতো ডেস্কটপ সফটওয়্যার। তার জন্য আবার একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার কে হায়ার করে ডেস্কটপ সফটওয়্যার বানিয়ে নেবে।

সুতরাং আপনি দেখতে পাচ্ছেন একজন বাইরের কত জায়গায় কত ধরনের লোক প্রয়োজন হয়ে থাকে। সুতরাং আপনি অবশ্যই বুঝতে পারছেন কিভাবে এবং কোন বিষয়ের ওপর আপনি ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারেন। মার্কেটপ্লেসে এরকম হাজারো ভাইয়ের রয়েছে আপনি চাইলে যে কোনো একটি কাজে নিজেকে দক্ষ করে নিয়ে কাজ শুরু করতে পারবেন। যে যে বিষয়গুলো আপনাকে গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে অর্থাৎ আমি যে যে বিষয়গুলোর ওপর কাজ করে সফলতা অধিক পরিমাপের পেতে পারেন সেগুলো হলো:

  • ওয়েব ডেভলপমেন্ট
  • ওয়েব ডিজাইন
  • গ্রাফিক্স ডিজাইন
  • ডিজিটাল মার্কেটিং
  • ভিডিও এডিটিং
  • কনটেন্ট রাইটিং
  • অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভলপার

আশা করি আপনারা বুঝতে পারছেন আমি কি বুঝাতে চাচ্ছি। আপনার যে কোন একটি নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির ওপর কাজ করতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনারা সফল হবেন।

কোন কাজ শিখবেন তার আগে ভাবতে হবে আপনার সময় কতটুকু রয়েছে। অনেকেই বলে থাকেন যে যত সময় প্রয়োজন দেবো। এক বছর না হলে দরকার এ দুই বছরেই শিখব। আসলে আমি এসব বিষয়ে আলোচনা হিসেবে একটু অভিজ্ঞতা পেয়েছি যে সবার ধৈর্য একই নয়। সুতরাং এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ধৈর্য ধারণ করতে হবে। একটু খেয়াল করে দেখুন পূর্বেই এরকম আরো অনেক ফ্রিল্যান্সার রয়েছে যাদের উদাহরণ যদি আপনি দেখেন তারা অনেক পরিশ্রমী ছিল।

আপনি যদি দেশের বাইরে কথা চিন্তা করেন যেখানে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ইত্যাদি অনেক কিছু রয়েছে। তারা কিন্তু এত ভালো ফ্রিল্যান্সার নয় কিন্তু আমাদের বাংলাদেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ না থাকা সত্ত্বেও আমাদের বাংলাদেশ অনেক দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হয়েছে এটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। একজন ভালো দক্ষ ব্যক্তির কাছে আপনি যদি ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট থেকে শুরু করে বাকি সব কাজ দৈনিক 5 থেকে 6 ঘন্টা পরিশ্রম করে পাঁচ থেকে ছয় মাস শিখেন তাহলে অবশ্যই আপনি ভালো কিছু করতে পারবেন।

আমি যখন ছোট ছিলাম অর্থাৎ আমি যখন ক্লাস নাইনে পড়তাম তখন থেকে আমি এসব শিখার শুরু করি। সে ক্ষেত্রে আমার সময় অনেক বেশি লেগেছিল ওয়েব ডিজাইন শিখতে এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে। সুতরাং আপনারা যদি শুরু করেন অবশ্যই ছোট বয়স থেকেই শুরু করা ভালো যাতে করে আপনাদের জ্ঞান অনেকটা বৃদ্ধি পাবে।

মূলত এই ক্ষেত্রে একটি গোপন কথা হল যাদের ব্রেন এখন ছোট অর্থাৎ যারা এখন বয়সে ছোট তাদের মস্তিষ্ক খুব পরিষ্কার হয়ে থাকে। আপনি যদি কোন কিছু শেখা শুরু করেন এই বয়সে তাহলে আপনি অবশ্যই খুব তাড়াতাড়ি জিনিসটা শিখে ফেলতে পারবেন। কোন কিছু শিখতে বড়দের একটু বেশি সময় লাগাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আপনি ধরুন একজন কলেজ স্টুডেন্ট বা স্কুলে পড়েন আপনি যদি দৈনিক 24 ঘন্টার ভিতরে 5 থেকে 6 ঘন্টা দেন অবশ্যই এক বছরে একজন ভাল ওয়েব ডিজাইনার আপনি হয়ে যেতে পারেন। আপনাকে কঠিন কাজের দিকেই পারদর্শী হতে হবে অনেকে ভাবতে পারেন ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট এগুলো অনেক কঠিন কাজ।

আপনি যদি একবারে সব শিখে ফেলতে পারেন তাহলে আপনার কাছে কোন কাজেই কঠিন বলে মনে হবে না এই কঠিন কাজ গুলো শিখলেই আপনার সুবিধা বেশি হবে। আপনারা অনেকে ভাবেন যে আমি দুমাস অনেক পরিশ্রম করে ওয়েব ডিজাইনিং শিখে তারপর অনলাইন থেকে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করব। না ভাইয়া বিষয়টা আপনারা যেমনটা ভাবছেন আসলে তেমন নয় আপনারা যদি এটা ভেবে থাকেন তাহলে অনেক বড় ভুল করছেন। কারণ আপনি আসার আগে এখনও অনেক দক্ষ দক্ষ ফ্রিল্যান্সার রয়েছে সুতরাং আপনাদের তাদের সাথে প্রতিযোগীতায় নামতে হবে।

আপনার ভাবতে পারেন এত প্রতিযোগিতায় না গিয়ে আমরা গুগল এডসেন্স অথবা ইউটিউব এর মাধ্যমে ইনকাম শুরু করব। তাহলে আমি বলব বর্তমান সময়ে এটি অনেক একটি জনপ্রিয় আইডিয়া আপনারা চাইলে এটি খুব সহজেই কাজে লাগিয়ে অনেক টাকা ইনকাম করে ফেলতে পারবেন। আপনি যে বিষয়ে দক্ষ সেই বিষয়ে কাজ শেখার জন্য আপনাকে অনুরোধ করা হল।

আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলার চেষ্টা করলাম কথা গুলো সবই বাস্তব আপনারা বাস্তবতার সাথে মিলিয়ে অবশ্যই দেখার চেষ্টা করবেন ধন্যবাদ।

 

Updated: March 31, 2022 — 7:52 pm