ফুসফুস কিভাবে কাজ করে – GSTresult

ফুসফুস কিভাবে কাজ করে ২০২২

 

আমাদের দেহের প্রতিটি অঙ্গই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মানবদেহের একটা অঙ্গ অনুপস্থিত মানে হলো আমাদের শারীরিক এবং মানসিক অসুস্থতা। আর সেই সাথে আমাদের মানব দেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ বলা যায় ফুসফুসকে। ফুসফুসের সাহায্যে আমরা সব সময়ে নিঃশ্বাস নিয়ে থাকি। 

যদি আমাদের এই ফুসফুস না থাকে তাহলে কিন্তু আমরা কিছুতেই নিঃশ্বাস গ্রহণ করতে পারব না এবং নিঃশ্বাস ছাড়তে পারবো না। আমাদের শাসনতন্ত্রের প্রধান অঙ্গগুলোর মধ্যে এই ফুসফুস অন্যতম একটি অঙ্গ। আর এই অংশের সাহায্যে কিন্তু শ্বাস কার্য সম্পন্ন করা যায় না। 

হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই! আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকের এই আর্টিকেল থেকে আমরা জানতে পারব ফুসফুস কিভাবে কাজ করে। চলুন জেনে নেয়া যাক আমাদের প্রয়োজনীয় অঙ্গ ফুসফুস কিভাবে কাজ করে।

 

ফুসফুস কি? 

 

ফুসফুসকে কাজ করার জন্য প্রয়োজন পড়ে শ্বসনতন্ত্রের আর শ্বসনতন্ত্রের বিশেষ অঙ্গ সমূহ হলো শ্বাসনালী। এই শ্বাসনালী দিয়েই আমরা কার্বন ডাই অক্সাইড ও অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং পরিত্যাগ করি। আর আমাদের এই ফুসফুসের চারদিকে রক্তনালী থাকে। 

রক্তনালী ছাড়াও আমাদের ফুসফুসের শাসনে পেশী শক্তি সাহায্য ও শ্বাস প্রশ্বাস গ্রহণ ও পরিত্যাগ করার জন্য সাহায্য করে থাকে। ফুসফুসের মাধ্যমে আমাদের দেহে পরিষ্কার এবং বিশুদ্ধ অক্সিজেন প্রবেশ করে। আর ক্ষতিকর বিভিন্ন ধরনের কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও অন্যান্য নানা ধরনের ঘাস পরিত্যাগ করতে সাহায্য করে থাকে।

 

ফুসফুস যেভাবে কাজ করে

আমাদের প্রত্যেকটা সময়ে শ্বাস গ্রহণ করা প্রয়োজন পড়ে। আর এই স্বাদ গ্রহণ করার জন্য আমাদের বেশি শক্তি ব্যবহার করতে হয় আর এই পেশীকে ডায়াফ্রাম ও বলা যেতে পারে। ডায়াফ্রাম বা প্রধান পেশী গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমাদের ফুসফুসের জন্য।

আমাদের দেহ বা শরীর কে একটু বাঁকা করে পেশী বা ডায়াফ্রাম নিঃশ্বাস গ্রহণের কাজটি সম্পাদন করে থাকে। ডায়াফ্রাম বা পেশী এভাবেই আমাদের শরীরের ভেতরে অক্সিজেন প্রবেশ করায়। আবার যখন কারণ অক্সাইড বের করার প্রয়োজন পড়ে তখন আবার এভাবেই ডায়াফ্রাম শিথিল হয়ে কার্বণ ডাই অক্সাইড বের করে দেয়। 

এভাবেই জাফলং এর কারণে ফুসফুস থেকে বাতাস বের হয় আবার বাতাস ভেতরে প্রবেশ করে। আর এই বাতাস প্রবেশ করার জন্য আমাদের না ও মুখের প্রয়োজন হয়। নাক ও মুখের ভেতর থেকে কার্বনডাই অক্সাইড বের হয় এবং অক্সিজেন ভেতরে প্রবেশ করে।

আমাদের নাকের ভিতর মিউকাস মেমব্রেন নামে একটি অঙ্গ রয়েছে। যেটা আমাদের নাক ও মুখ দিয়ে যখন কোন বাতাস ফুসফুসে প্রবেশ করে, তখন যদি বাতাসের সাথে কোন ময়লা আবর্জনা থাকে। তাহলে মিউকাস মেমব্রেন ময়লা গুলো কে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয় না।

সেই সাথে যদি আমরা কখনো গরম বাতাস গ্রহণ করি তখনই মিউকাস মেমব্রেন সেই গরম বাতাস টা কে ঠান্ডা করে দেয়। আবার যখন অতিরিক্ত ঠান্ডা বাতাস নাক দিয়ে গ্রহণ করি তখন এই মিউকাস মেমব্রেন ঠান্ডা বাতাস টা কে নরমাল করে দেয়। এরপরে বাতাস টা কে ফুসফুসের ভেতরে প্রবেশ করে। 

 

ফুসফুসে কিভাবে বিশুদ্ধ বাতাস প্রবেশ করে?

এখন হয়তো আপনি ভাবছেন যে ফুসফুস কিভাবে বিশুদ্ধ বাতাস গ্রহণ করে। এটা আসলে ঘটে আমাদের নাকের ভিতরে থাকা ছোট ছোট কিছু পশম বা লোম রয়েছে। যখন আপনি বাতাস গ্রহণ করবেন তখন এই লোম গুলো বিভিন্ন ধরনের ময়লা ধরে রাখবে এবং বিশুদ্ধ বাতাস ভেতরে প্রবেশ করতে দিবে।

আর এটা তো নিশ্চয়ই ই জানেন বড় বড় যেসব ধুলোবালি বা ময়লা থাকে ওগুলো নাকের বাইরেই রয়ে যায়। সেগুলো আর বাতাসের সাথে ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না। আর যদিও বড় বড় ময়লা গুলো প্রবেশ করার চেষ্টা করে করে তাহলে কিন্তু আপনার হাচি আসবে।

হাচির মাধ্যমে খুব সহজেই ময়লা গুলো বের হয়ে যায়। আর এভাবেই বড় বড় ময়লা গুলো ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না। আর ছোট ছোট ময়লা গুলো নাকের ভেতরে থাকা বিভিন্ন লোমের আটকে যায়। এভাবে আপনার নাকে মাধ্যমে বিশুদ্ধ বাতাস ফুসফুসে প্রবেশ করে।

এখন হয়তো আপনার মাথায় এই প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে যে, যদিও ছোট ছোট ময়লা ভেতরে প্রবেশ করে যায় তখন কি হয়? এটার ও উত্তর আমাদের কাছে আছে। যখন কোন ময়লা ছোট ছোট পশমের সাথে না আটকে বাতাসের সাথে ফুসফুসের ভেতরে প্রবেশ করে। 

তখন আমাদের ফুসফুস প্রান্তে থাকা ব্রংকিওল ও ব্রংকাই নামক মিউকাস রয়েছে। যে মিউকাস গুলো ছোট ছোট ময়লা গুলোকে এক প্রকারে তারা করতে থাকে। যতক্ষণ না পর্যন্ত ময়লা গুলোকে তারা ধরতে না পারছে ততক্ষণ পর্যন্ত ধরার জন্য ছুটে চলে।

আবার সেখানে একটা বায়ুথলি রয়েছে। যেখানে ছোট ছোট চুলের মত কতগুলো বস্তু থাকে যাকে সিলিয়া বলা হয়। এরপরে যখন ময়লা গুলো ব্রংকাই মিউকাস ধরে ফেলে তখন আমাদের গলার দিকে ময়লা গুলোকে পাঠিয়ে দেয়। 

আর তখনই আমরা হাঁচি বা কাশি দিয়ে ময়লা গুলো বের করে ফেলতে পারি। এর পরও যখন ব্রংকাস মিউকাস ছোট ছোট ময়লাগুলো কে ধরতে না পারে তখন সে ময়লা গুলো চলে যায় আমাদের বায়ুথলিতে। আবার এই বায়ুথলিতে রয়েছে কিছু ম্যাক্রোফেজ।

যে ম্যাক্রোফেজ সর্ব শেষ পর্যন্ত ময়লা গুলো কে ধরে ফেলে। আর এইভাবে তিনি মূলত আমাদের সারা দেহে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়। এভাবেই আমাদের ফুসফুসে একেবারে বিশুদ্ধ অক্সিজেন বাতাস প্রবেশ করে থাকে। আবার এভাবেই কার্বন ডাই অক্সাইড বেরিয়ে আসে। 

তো এখন হয়ত বুঝতে পারছেন যে কিভাবে আমাদের ফুসফুসে পরিস্কার বায়ু প্রবেশ করে থাকে। এই প্রক্রিয়া চলতে থাকে আর এভাবেই আমাদের ফুসফুসে পরিষ্কার বায়ু বা বাতাস সব সময় প্রবেশ করে থাকে। আর বের হওয়ার সময় তো সেটা সরাসরি বেরিয়ে আসে। কেননা তখন তো আর কোন ময়লা থাকে না।

 

দূষিত বাতাস কেন প্রবেশ করে?

এখন হয়তো বলে থাকতে পারেন যে দূষিত বাতাস কেন প্রবেশ করে। কিছু কিছু কারণে আমাদের ফুসফুস প্রণালীতে দূষিত বাতাস প্রবেশ করতে পারে। যদি এসব কারণ গুলোতে আমাদের ফুসফুসে দূষিত বাতাস প্রবেশ করতো ই থাকে, তাহলে এতে করে বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের রোগ জীবাণু হয়ে থাকে। 

যেমন কিছু ধরনের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার হিসেবে প্রবেশের ফলে আমাদের শ্বাসনালীতে বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন হয়ে যায়। আর এতে করে আমরা বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বা রোগে আক্রান্ত হই। এই যেমন ধরেন বিভিন্ন ধরনের ঠান্ডার সমস্যা এলার্জি নিউমোনিয়া এমনকি কিছু কিছু কারণে আমাদের মারাত্মক ক্যান্সার হয়ে যেতে পারে।

এই যেমন ধরেন বিষাক্ত সিগারেটের ধোঁয়া যা আপনার শ্বাসকষ্টের কারণ হতে পারে। এতে করে আপনি বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারেন। কেননা সিগারেট এক ধরনের নিকোটিন রয়েছে যেগুলো ফুসফুসে প্রচুর পরিমাণে ক্ষতি করে সেই সাথে ফুসফুসে থাকা বিভিন্ন অঙ্গের কাজে সমস্যা সৃষ্টি করে।

 

শেষকথা

আজকের এই আর্টিকেল ফুসফুস সম্পর্কে তথ্য অনেক তথ্যই শেয়ার করা হলো আজকের মত ফুসফুস কিভাবে কাজ করে এসব নিয়ে এ পর্যন্তই ছিল। আপনাদের ফুসফুস সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আশা করি যেসব ভ্রান্ত ধারণা গুলো ছিল সেগুলো দূর করতে পেরেছি।

 

আর হ্যাঁ আপনি যদি নতুন কোন বিষয়ে নতুন কোনো আরটিকেল চান। তাহলে বিষয়টি কমেন্ট করে লিখে আমাদেরকে জানাতে পারেন। আমরা খুব শীঘ্রই আপনার বিষয়টি নিয়ে নতুন লেখা পাবলিশ করার চেষ্টা করব।

আপনার কোন বন্ধুবান্ধব যদি ফুসফুস সম্পর্কে কিছু না জেনে থাকে, তাহলে তাদের সাথে এই আর্টিকেলের শেয়ার করতে পারেন। এতে করে তারা ফুসফুস নিয়ে অনেক তথ্য জানতে পারবে।

আজকের মত এ পর্যন্তই ছিল, দেখা হবে আবার নতুন কোন আর্টিকেলে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। ততক্ষণ পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

ধন্যবাদ। 

 

 

Updated: April 10, 2022 — 11:58 pm