ই পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম?

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা বিদেশে ভ্রমণ করার পাশাপাশি কাজের জন্য গিয়ে থাকে। এজন্য তাদের একটি প্রয়োজন হয় পাসপোর্ট এর। কেননা আমাদের মধ্যে অনেক আছে বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করার জন্য যায়। তখন তাদের কিন্তু ভ্রমণ করার জন্য পাসপোর্ট এবং ভিসা প্রয়োজন হয়।

বর্তমানে আমাদের দেশে একটি পাসপোর্ট সিস্টেম বের হয়েছে সেটাকে ই-পাসপোর্ট বলা হয়ে থাকে। ই পাসপোর্ট এর মাধ্যমে আপনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন শুধুমাত্র ইহুদিদের দেশ ইজরাইল ছাড়া। এখন আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা ই পাসপোর্ট সম্পর্কে কিছুই জানে না।

আবার যারা বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করতে চায় বা বিভিন্ন দেশে কাজের জন্য যায় তখন তাদের কিন্তু ই পাসপোর্ট এর প্রয়োজন পড়ে। তাদের মধ্যে অনেকে ই আছে যারা এটা ও জানে না যে ই-পাসপোর্ট এর জন্য কিভাবে অনলাইনে আবেদন করতে হয় এবং ই পাসপোর্ট কিভাবে চেক করা হয়।

আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই! আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকের এ আর্টিকেল থেকে আপনারা জানতে পারবেন কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করবেন এবং কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্ট চেক করবেন।

আপনি যদি অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে চান অথবা অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্ট চেক করতে চান। তাহলে অবশ্যই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের এই আর্টিকেল টি ভালো ভাবে পড়বেন। তাহলে খুব সহজেই আপনি নিজে নিজে অনলাইনের মাধ্যমে আপনার ই পাসপোর্ট অনলাইনের মাধ্যমে চেক করতে পারবেন।

সেই সাথে যদি নতুন কোন ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে চান তাহলে অবশ্যই সেটা ও নিজে নিজেই করতে পারবেন। কেননা আজকের এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র ই পাসপোর্ট সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে সাজানো হয়েছে। তো চলুন জেনে নেয়া যাক ই পাসপোর্ট এর জন্য কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করবেন অথবা কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্ট চেক করবেন।

ই-পাসপোর্ট কি?

ই-পাসপোর্ট হলো একটি দেশের নাগরিকের নাগরিকত্ব সনদ সে যেন বৈধ ভাবে অন্য দেশে যেতে পারবে তার প্রমান। একটি দেশের নাগরিক যদি অন্য কোন দেশে ভ্রমণ করতে চায় অথবা কাজের জন্য যেতে চায় তাহলে তাকে নিজের দেশের সরকারি ইস্যুকৃত কাগজের প্রয়োজন হবে।

যেটাকে আমরা মূলত পাসপোর্ট বলে থাকি। ই-পাসপোর্ট কে আবার আধুনিক করার মাধ্যমে নাগরিকের বিভিন্ন তথ্য হালনাগাদ করা হয়ে থাকে। যেটা কে বর্তমানে ই-পাসপোর্ট বলা হয়ে থাকে। ই-পাসপোর্ট অর্থ হল ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট। একটি দেশের জনগণ যদি অন্য কোন দেশে যেতে চায় তাহলে তার অবশ্যই পাসপোর্ট এর প্রয়োজন রয়েছে।

সে পাসপোর্ট ছাড়া অন্য কোন দেশে ভ্রমণ করতে পারবে না। কেননা সে যদি অন্য কোন দেশে প্রবেশ করে বা যায় তাহলে ওই দেশে গিয়ে নিজেকে কোন দেশের হিসেবে প্রমাণ করবে। যেহেতু তার কাছে প্রমাণ করার মত কিছুই নেই সেহেতু তাকে ওই দেশের সরকার আইন অনুযায়ী গ্রেপ্তার করতে বাধ্য হবে।

আর তাই পাসপোর্ট সেবার মাধ্যমে একটি দেশের নাগরিক যে কোন দেশে গেলে সে কোন দেশের সেটা সে নিজেই যাচাই করতে পারে। এই পাসপোর্ট এর কারনে একটি দেশের নাগরিকের বিদেশে গিয়ে কোন ধরনের আইনি জটিলতায় পড়তে হয়। আর এই কারনেই পাসপোর্ট সিস্টেমটি চালু হয়েছে। যাতে করে যেকোনো দেশের একজন নাগরিক অন্য দেশে প্রবেশ করতে পারে।

ই-পাসপোর্ট কত প্রকার

আমাদের দেশ তথা বাংলাদেশে বর্তমানে তিন ধরনের ই-পাসপোর্ট রয়েছে। একটি সাধারন পাসপোর্ট, সরকারি পাসপোর্ট এবং তৃতীয়টি হলো কূটনৈতিক পাসপোর্ট। সাধারন পাসপোর্ট এর মাধ্যমে বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক খুব সহজেই বিভিন্ন দেশে প্রবেশ করতে পারবে। সাধারণ পাসপোর্টগুলো মূলত সবুজ রঙের হয়ে থাকে।

সরকারি পাসপোর্ট গুলোতে মূলত বাংলাদেশের সরকারি চাকরিজীবীরা উচ্চপদস্ত সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ কে দেওয়া হবে বা তাদের কে প্রদান করা হয়। এখানে সাধারণ কোনো নাগরিক এই পাসপোর্ট এর অধিকারী হতে পারবে না। সরকারি পাসপোর্ট এর রং নীল রঙের হয়ে থাকে।

সর্বশেষ কূটনৈতিক পাসপোর্ট হলো একটি দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের, কূটনীতিক উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা এবং কূটনৈতিক কুরিয়ার দেরকে শুধুমাত্র দেওয়া হয়।

সাধারণ নাগরিক কে এই পাসপোর্ট দেওয়া হয় না। কূটনীতিক পাসপোর্ট গুলো মূলত লাল রঙের হয়ে থাকে। লাল রংয়ের পাসপোর্ট গুলোর বিশেষ সুযোগ সুবিধা রয়েছে। এগুলো মূলত বাংলাদেশের বিভিন্ন কূটনীতিক ব্যক্তিগণকে শুধুমাত্র দেওয়া হয়।

কিভাবে ই-পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করবেন?

আপনাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বা নাগরিক হতে হবে। দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবির প্রয়োজন হবে। জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন এর ফটোকপি প্রয়োজন হবে। পেমেন্ট স্লিপ এর প্রয়োজন হবে। আর যদি আপনার প্রযুক্তিগত কোন ধরনের ডিগ্রী থাকে তাহলে তার ফটো কপি দিতে হবে।

আপনি যেকোন দেশে ভ্রমণ অথবা কাজের জন্য পাসপোর্ট এর আবেদন করতে চান তাহলে আপনি খুব সহজেই ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। এ জন্য আপনাকে প্রথমে যেতে হবে আপনার নির্দিষ্ট এলাকায় ই পাসপোর্ট অফিসের পাসপোর্ট অফিসে। আপনার এলাকার নির্দৃষ্ট পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে সেখানে একটি অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্ট আবেদন করার ফরম রয়েছে সেটা পূরণ করতে হবে।

এছাড়া আপনি চাইলে অনলাইনের মাধ্যমে ও ফরম টি পূরণ করতে পারেন। অনলাইনের মাধ্যমে ই-পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে নিচের লিংকে চলে যান। https://www.epassport.gov.bd/ এরপর সেখানে আপনার প্রয়োজনীয় সব মূল্যবান তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট ফি প্রদান করতে হবে।

পাসপোর্ট এর আবেদন করার পর বায়োমেট্রিক তালিকাভুক্তির জন্য পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে নিজেকে তালিকাভুক্ত করতে হবে। এরপর আপনি আপনার পাসপোর্টি হাতে পাবেন বা সংরক্ষণ করতে পারবেন। তবে এর মধ্যে আপনাকে ভেরিফিকেশন করার জন্য আপনার গ্রামে অথবা আপনার স্থানীয় এলাকায় প্রশাসনের কোন লোক গিয়ে আপনাকে যাচাই করতে পারে।

এখন হয়তো আপনার অনেকে জেনে থাকবেন যে বাংলাদেশে পাসপোর্ট 48 পৃষ্ঠার রয়েছে এবং 64 পৃষ্ঠায় রয়েছে। এখন আপনি যদি 48 পৃষ্ঠার একটি পাসপোর্ট তৈরি করতে চান পাঁচ বছরের জন্য তাহলে আপনার খরচ হবে 4,025/- টাকা মাত্র।

এছাড়া আপনি যদি আমার 48 পৃষ্ঠার একটি পাসপোর্ট 10 বছরের জন্য তৈরী করতে চান তাহলে এক্ষেত্রে আপনার পাসপোর্ট এর ফি দিতে হবপ পাঁচ হাজার সাতশত 50 টাকা মাত্র। আর যদি আপনি 64 পৃষ্টার একটি পাসপোর্ট তৈরি করতে চান তাহলে এর জন্য আপনাকে পাসপোর্ট ফি পাঁচ বছরের জন্য 6,325/- টাকা দিতে হবে।

ই পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম

আপনি যদি ই পাসপোর্ট তৈরি করতে দিয়ে থাকেন অথবা অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্ট এর ফরম পূরণ করে থাকেন। তাহলে আপনাকে ই পাসপোর্ট অনলাইনের মাধ্যমে যাচাই করতে যেটা করতে হবে সেটা হলো নিচের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যাচাই করতে হবে।

যে আপনার ই পাসপোর্টটি বর্তমান অবস্থা নিচের এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে খুব সহজে চেক করে নিতে পারবেন। আমাদের দেশ তথা বাংলাদেশের অভিবাসন ও পাসপোর্ট অফিসের ওয়েবসাইট এর লিঙ্ক হলোঃ

https://www.epassport.gov.bd/authorization/application-status

উপরের ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনি প্রথমে অনলাইনের মাধ্যমে যে রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন ই পাসপোর্ট এর জন্য সে আইডিটি অথবা অ্যাপ্লিকেশন আইডি দিবেন। এরপরে আপনি অনলাইনে মাধ্যমে আবেদন করার সময় যে ফর্মটা পেয়েছিলেন ই-পাসপোর্ট এর সেটা এখানে ও দেখতে পাবেন।

ওয়েবসাইটে আপনার জন্ম তারিখ দেওয়ার পরে একটি ক্যাপচা পূরণ করতে হবে। ক্যাপচা পুরন করার পরে আপনি আপনার পাসপোর্ট এর বর্তমান অবস্থা টি খুব সহজে দেখতে পারবেন। এর মাধ্যমে আপনি আপনার পাসপোর্টটি চেক করে নিতে পারেন যে আপনার পাসপোর্টটি ইস্যুকৃত হয়েছে কি হয়নি।

এছাড়া আপনারা চাইলে বাংলাদেশ সরকারের পাসপোর্টে যে অফিস রয়েছে সেখানে ও পাসপোর্ট এর অবস্থা জানতে পারবেন। এ জন্য আপনাকে প্রথমে নিচের অ্যাড্রেসে যেতে হবে।

ডিভিশনাল পাসপোর্ট এন্ড ভিসা অফিস,
বিল্ডিং নং২০ই-৭, শেরেবাংলা নগর, আগারগাঁও, ঢাকা।

শেষ কথা

ই পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম ও কিভাবে ই পাসপোর্ট চেক করতে হয় আশা করি আপনি আমাদের আর্টিকেল এর মাধ্যমে খুব সহজেই বুঝতে পেরেছেন। এর পরও যদি কোন কিছু বুঝতে অসুবিধা হয়, তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে আপনার সমস্যাটা সমাধান করে দেওয়ার চেষ্টা করবো। তো আজকের মত এ পর্যন্তই ছিল ই পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম সম্পর্কে।

আপনি যদি নতুন কোন বিষয়ে নতুন কোনো আর্টিকেল চান, তাহলে উক্ত বিষয়টি কমেন্ট করে লিখে আমাদেরকে জানাতে পারেন। আমরা খুব শীঘ্রই আপনার বিষয়টি নিয়ে নতুন লেখা পাবলিশ করার চেষ্টা করব। আজকের মত এ পর্যন্তই ছিল, দেখা হবে আবার নতুন কোন আর্টিকেলে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। ততক্ষণ পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ধন্যবাদ।

 

Updated: April 13, 2022 — 7:57 pm