টু স্টেপ ভেরিফিকেশন কিভাবে কাজ করে? – GstResult

বর্তমান সময়ের এই ডিজিটাল যুগে আমরা কম বেশি সবাই বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে থাকি। এইসব সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের তথ্য আদান প্রদান করার পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের বিনোদনসহ আরো নানান ভাবে উপকৃত হই।

এই সোশ্যাল মিডিয়া গুলো ব্যবহার করার পাশাপাশি এখানে আমাদের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট খোলা থাকে। আর এসব একাউন্ট গুলোর নিরাপত্তা খুবই প্রয়োজন। কেননা এসব একাউন্টে আমাদের বিভিন্ন ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য ছাড়া বিভিন্ন ধরনের ব্যক্তিগত বিষয় রয়েছে যেগুলো নিরাপত্তা খুবই প্রয়োজন।

যদি কখনো কোনো হ্যাকারের হাতে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য ও ডাটা গুলো চলে যায় তাহলে আমরা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবো। কেননা হ্যাকারের আমাদের এইসব ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে আমাদের বিভিন্ন সমস্যায় ফেলতে পারে। যা পরবর্তীতে বড় কোনো দুর্ঘটনা সৃষ্টি করতে পারে।

তাই আমাদের একাউন্ট গুলোর পার্সওয়ার্ড এমন ভাবে দেওয়া প্রয়োজন পড়ে। যাতে করে কখনো সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট গুলো হ্যাক হয়ে না যায়। এতে করে আমরা আমাদের ব্যাক্তিগত বিভিন্ন ধরনের তথ্য ও ডাটা গুলো কে হ্যাকারের হাত থেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারি।

কিন্তু আমাদের আর একটু সমস্যা হয় যে যখন আমরা এইসব সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট গুলোতে লগইন করি। তখন এসব একাউন্টে আমাদের একটা পাসওয়ার্ড দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু আমরা যদি পাসওয়ার্ড দেই।

আর যদি কখনো কোন ভুলে হ্যাকারের কাছে এই পাসওয়ার্ডটি ভুলক্রমে চলে যায়। তাহলে কিন্তু আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য ও ডাটা সহ একাউন্টটি আর ফিরে পাওয়া যাবে না। আর এই কারণে বর্তমানে এমন একটি সিস্টেম বের হয়েছে যেটার মাধ্যমে শুধুমাত্র পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করা যাবে না।

পাসওয়ার্ড এর সাথে আর ও প্রয়োজন পড়বে বিভিন্ন ধরনের তথ্য। আর এটাকে বলা হয়ে থাকে টু স্টেপ ভেরিফিকেশন। বর্তমানে গুগোল কর্পোরেশনের জিমেইল একাউন্টে সাধারণত টু স্টেপ ভেরিফিকেশন সিস্টেমটি চালু হয়েছে।

তবে কথা হচ্ছে যে, খুব শীঘ্রই সোশ্যাল মিডিয়া facebook-এ খুব শিগগিরই টু স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু হওয়ার কথা রয়েছে। যাতে করে শুধুমাত্র পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন ছাড়া ব্যক্তিগত ভেরিফিকেশন কোড এর মাধ্যমে লগইন করা যায়। এতে করে তাদের একাউন্ট টি আগের তুলনায় হাজার গুনে সুরক্ষিত থাকবে।

 

টু স্টেপ ভেরিফিকেশন কি?

‘টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন’ হলো এমন একটি আইডেন্টিটি মেথড যার সাহায্যে কোন একাউন্টে প্রবেশ করার সময় খুব নিরাপদে দুইটি মাধ্যমে বা দুইটি স্টেপ ভেরিফাই করে লগইন বা প্রবেশ করা হয়। প্রথমে কোন একাউন্টে প্রবেশ করার জন্য ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিতে হয়।

ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দেওয়ার পরে দ্বিতীয় ধাপের টু স্টেপ ভেরিফিকেশন করতে হয়। আর এটা করা হয়ে থাকে কোন ফোন নাম্বার অথবা অন্যকোন থার্ড পার্টি সিস্টেম এ ভেরিফিকেশন কোড পাঠানোর মাধ্যমে। টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন’ মানে হলো প্রথম স্টেপ ভেরিফিকেশন করার পরে দ্বিতীয় স্টেপ ভেরিফিকেশন।

যেমন প্রথমে পাসওয়ার্ড ও ইউজার নেম দিয়ে লগইন করে প্রথম স্টেপ ভেরিফিকেশন করলেন। এরপর আপনাকে দ্বিতীয় স্টেপ টু স্টেপ ভেরিফিকেশন করতে হবে। এজন্য আপনাকে কোন ফোন নাম্বারে একটি ছয় ডিজিটের কোড পাঠানো হবে। যেটা ভেরিফিকেশন করে আপনার একাউন্টে আপনি প্রবেশ করতে পারবেন। এই পদ্ধতিকে সাধারণত টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন বলা হয়ে থাকে।

 

টু স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করার নিয়ম

আমরা আপনাদের বোঝানোর স্বার্থে নিচে গুগল একাউন্টে কিভাবে ভেরিফিকেশন সিস্টেমটি চালু করবেন সেটাই বোঝানোর চেষ্টা করেছি। এই একই নিয়মে আপনি বিভিন্ন সোশ্যাল একাউন্টে টু স্টেপ ভেরিফিকেশন সিস্টেম চালু করতে পারবেন।

গুগল একাউন্টে টু স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করার নিয়ম। বলা হয়ে থাকে যে, সর্বপ্রথম গুগল ই টু স্টেপ ভেরিফিকেশন সিস্টেমটি চালু করেছে। আপনি যদি ইউটিউব ব্যবহার করেন তাহলে নিশ্চয়ই আপনার একটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট রয়েছে। আর আপনার একাউন্টে নিরাপদ করার জন্য আপনি টু স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করতে পারেন।

তো নিচে আমরা step-by-step শিখিয়ে দিয়েছি যে কিভাবে আপনাকে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন’ সিস্টেম চালু করতে হবে। আপনি শুধু আমাদের নিচের নিয়ম গুলো একটু ফলো করুন। তাহলে খুব সহজেই গুগল একাউন্টে টু স্টেপ ভেরিফিকেশন করতে পারবেন।

আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্ট বা গুগল অ্যাকাউন্ট টু স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে চলে যেতে হবে গুগল একাউন্টে (Google Accounts)। গুগল একাউন্টে চলে যাওয়ার পর দেখতে পাবেন আপনার বামদিকে সিকিউরিটি (Security) নামক একটি ট্যাব রয়েছে।

সেই সিকিউরিটি (Security) ক্লিক করতে হবে ক্লিক করার পর একটু স্ক্রল করে নিচে আসবেন। নিচে আসলে দেখতে পাবেন 2-step Verification লেখা রয়েছে। এখন আপনাকে করতে হবে টু স্টেপ ভেরিফিকেশন এ ক্লিক। ক্লিক করার পর দেখবেন স্টার্ট (Start) নাম লেখা একটি বাটন, সেটাতে ক্লিক করতে হবে।

ক্লিক করার পর আপনার সামনে কত গুলো গুগলের নির্দেশনা আসবে। এরপর আপনি শুধু নির্দেশনা গুলো অনুসরণ করবেন। এরপরে আপনাকে আপনার নিজের আইডেন্টি কনফার্ম করতে হবে। এজন্য পাসওয়ার্ড দিয়ে Try It Now নামে ক্লিক করতে হবে। ট্রাই ইট নও (Tyr It Now) ক্লিক করার পর আপনাকে সেখানে একটি মোবাইল নাম্বার যোগ করতে হবে।

মোবাইল নাম্বার যোগ করার পর পরেই আপনার ওই নাম্বারে ছয় ডিজিটের একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে। এখন সেন্ড বাটনে ক্লিক করবেন। সেন্ড বাটনে ক্লিক করার পর আপনার স্মার্টফোনের নাম্বারে যে ছয় ডিজিটের করতে এসেছে। সেই কোডটি প্রবেশ করিয়ে আপনার আইডি ভেরিফাই করতে হবে।

আপনার আইডি টি ভেরিফাই করার পর আপনি নেক্সট (Next) এ ক্লিক করবেন। সর্বশেষে আপনারা দেখবেন টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন টার্ন (2 Factor Onthetice Turn) নামে একটি বাটন। সেখানে ক্লিক করে সেটা টার্ন (Turn) বা অন করে দিবেন।

[অভিনন্দন! আপনি আপনার জিমেইল একাউন্টে টু স্টেপ ভেরিফিকেশন সিস্টেম নিজে নিজেই চালু করতে পেরেছেন]

এখন ট্রাই করার জন্য আপনার অন্য একটি স্মার্টফোনে গিয়ে দেখতে পারেন। এজন্য প্রথমে চলে যাবেন গুগল একাউন্টটে। সেখানে গিয়ে লগ ইন গুগল একাউন্ট এ লেখায় ক্লিক করতে হবে। লগইন গুগল একাউন্ট এ ক্লিক করার পর আপনার মেইলের বা একাউন্টের পাসওয়ার্ড এবং জিমেইল দিয়ে তারপর ওকে দিবেন।

এখন দেখবেন আপনার ফোন নাম্বারে একটি ছয় ডিজিটের একটি ভেরিফিকেশন কোড গিয়েছে। এখন যদি আপনি এই ভেরিফিকেশন কোড টি না দেন তাহলে কিন্তু আপনি আপনার জিমেইল একাউন্টে লগইন করতে পারবেন না। দেখেন আপনার কাছে কিন্তু পাসওয়ার্ড রয়েছে তারপরও কিন্তু আপনি লগইন করতে পারছেন না। এটাই হলো টু স্টেপ ভেরিফিকেশন।

প্রথমে আপনাকে পাসওয়ার্ড দিয়ে ভেরিফিকেশন করতে হবে। এরপরে আপনার মোবাইল ফোনের যে নাম্বার দিয়েছেন। সেই নাম্বারে একটা ভেরিফাই কোড যাবে। ভেরিফিকেশন কোড দেওয়ার পরে আপনি আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারবেন। এটা কে মূলত টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন’ বলা হয়ে থাকে।

আপনার যদি গুগল অ্যাকাউন্ট থেকে থাকে। তাহলে এভাবে আপনার গুগল একাউন্টে খুব সহজেই টু স্টেপ ভেরিফিকেশন সিস্টেম চালু করে দিতে পারবেন। এভাবেই খুব সহজে আপনি যেকোনো ফোন দিয়ে আপনার যেকোন গুগল একাউন্ট বা জিমেইল একাউন্টে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন’ সিস্টেমটি চালু করতে পারবেন।

 

শেষকথা

আজকেরে আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি যে কিভাবে টু স্টেপ ভেরিফিকেশন সিস্টেম চালু করবেন। সেই সাথে আরও জানার চেষ্টা করেছি টু স্টেপ ভেরিফিকেশন কি!

আশা করি আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে টু স্টেপ ভেরিফিকেশন সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন। সেই যাতে আরো জানতে পেরেছেন যে কিভাবে ‘টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন’ সিস্টেমটি আপনি নিজে নিজেই চালু করতে পারবেন।

আর হ্যাঁ আপনি যদি নতুন কোন বিষয়ে নতুন কোনো আর্টিকেল চান, তাহলে উক্ত বিষয়টি কমেন্ট করে লিখে আমাদেরকে জানাতে পারেন। আমরা খুব শীঘ্রই আপনার বিষয়টি নিয়ে নতুন লেখা পাবলিশ করার চেষ্টা করব।

আপনার কোন বন্ধু বান্ধব বা আত্মীয় স্বজনেরা যদি টু স্টেপ ভেরিফিকেশন সিস্টেম চালু করতে না পারে, তাহলে তাদের সাথে এই আর্টিকেলের শেয়ার করতে পারেন। এতে করে তারা ফুসফুস নিয়ে অনেক তথ্য জানতে পারবে।

আজকের মত এ পর্যন্তই ছিল, দেখা হবে আবার নতুন কোন আর্টিকেলে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। ততক্ষণ পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

ধন্যবাদ।

 

Updated: April 11, 2022 — 1:00 am