বাষ্পীয় ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে

হ্যালো বন্ধুরা! কেমন আছেন সবাই, আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। তো আপনার হয়তো অনেকে বাষ্পীয় ইঞ্জিন নামটা শুনে থাকবেন। যারা আগেকার দিনের মানুষ তাদের মুখে সবসময় এই নামটি শোনা যায়। হয়তো আপনি নামটা শুনেছেন কিন্তু জানেন না এটা কিভাবে কাজ করে।

আজকের এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব কিভাবে কাজ করে। আপনি যদি বাষ্পীয় ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে জানতে চান তাহলে অবশ্যই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের আর্টিকেলটি পড়বেন।

আপনি যদি আমাদের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত না পড়েন তাহলে কিন্তু কিছুতেই জানতে পারবেন না যে বাস্পীয় ইঞ্জিন কীভাবে কাজ করে। চলুন জেনে নেয়া যাক কিভাবে কাজ করে।

বাষ্পীয় ইঞ্জিন কি?

বাস্পীয় ইঞ্জিন হলো এমন একটি ইঞ্জিন যেটার সাহায্যে কয়লা পুড়িয়ে পানির মাধ্যমে তাপ শক্তি উৎপাদন করা হয়। আর সেই তাপ এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের কাজ করা যায়।

যদি ও আগেকার দিনে আমাদের বিদ্যুৎ এর পরিমাণ এতটা ছিল না। বর্তমানে যত টা বিদ্যুৎ হয়েছে। কিন্তু আগে ছিল এই কয়লা যা থেকে উৎপন্ন তাপ বিদ্যুৎ এর সাহায্যে বিভিন্ন গাড়ি ও যানবাহন চলাচল করত।

যদিও এখনকার সময় আর এই বাষ্পীয় ইঞ্জিনের যানবাহন গুলো তেমন একটা দেখা যায় না বললেই চলে। কেননা এখন বাস্পীয় ইঞ্জিন এর বিভিন্ন যানবাহন গুলো বিভিন্ন জাদুঘরে স্থান পেয়েছে।

বাষ্পীয় ইঞ্জিন মূলত কয়লার মাধ্যমে তাপ শক্তি উৎপাদন করে থাকে। ধরুন আপনি যদি একটা পাত্র এর নিচে কয়লা দিয়েছেন। আর পাত্রে এর ভেতরে পানি জ্বাল দিচ্ছেন।

এখন আপনার এই কয়লা তাপ উৎপন্ন করে পানি কে ঘনীভূত করে তাপ শক্তি উৎপন্ন করবে। পাত্রের যে বাষ্প উৎপন্ন হচ্ছে সেটা দিয়ে যন্ত্র কাজ করতে থাকে।

বাষ্পীয় ইঞ্জিনে কোথা থেকে শক্তি আসে?

বর্তমানে আমাদের দেশে এসেছে মেট্রোরেল। মেট্রোরেল বিদ্যুতের সাহায্যে খুব উচ্চ গতিতে ছুটে চলতে পারে। কিন্তু অন্যদিকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে কিছু ট্রেনের ইঞ্জিন রয়েছে যেগুলো বেশিরভাগ তেল ব্যবহার করার মাধ্যমে চলে থাকে।

এছাড়াও আমরা আমাদের চারপাশে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন দেখে থাকি এগুলোর বেশিরভাগই হয়তো চলে প্রাকৃতিক গ্যাসে। তবে সবচেয়ে বেশি চলে হলো তেল জাতীয় ডিজেল, অকটেন, পেট্রোল ইত্যাদিতে।

আবার অনেক সময় বেশিরভাগ গাড়ি বর্তমানে বা ভবিষ্যতে যে গাড়িগুলো বেশিরভাগ আসতে চলেছে সেগুলো চলে বিদ্যুতে অথবা মোটরে চলছে ও চলবে। তবে আজ থেকে অনেক আগে না তেল আবিষ্কার হয়েছিল না হয়েছিল এই গ্যাস আবিষ্কার আর নাইবা হয়েছিল বিদ্যুৎ আবিষ্কার।

তখনকার দিনের এই ট্রেন গুলো চলার জন্য জ্বালানি হিসেবে কয়লা ব্যবহার করত। আর তৎকালীন সময়ে এই কয়লা ছিল জ্বালানি হিসেবে খুবই জনপ্রিয় একটি জ্বালানি। যেটার মাধ্যমে ট্রেন থেকে শুরু করে জাহাজ বা এমন কি প্লেন চলাচল করে থাকতো।

কিন্তু যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বর্তমানে আর কয়লার সেই জ্বালানি হিসেবে দেখা হয় না। বর্তমানে বিদ্যুৎ আবিষ্কার হয়েছে, বর্তমানে তেল আবিষ্কার হয়েছে, বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের গ্যাস আবিষ্কার হয়েছে। যার সাহায্যে খুব সহজেই কয়লা ছাড়াই যেকোনো বা যানবাহন চলতে পারে।

কিন্তু এ কয়লার সাথে জড়িয়ে রয়েছে বাষ্প ইঞ্জিন নামক শব্দটি। কয়লা হল এক ধরনের জৈব যৌগ পদার্থ যেটা কে মূলত কার্বনের একটি কঠিন রুপ বলা যেতে পারে। আর কয়লা গুলো কে এক ধরনের জীবাশ্ম জ্বালানি বলা হয়ে থাকে। কেননা কয়লার ভেতরে থাকে কার্বন ডাই অক্সাইড, অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন এর মিশ্রণ।

যেটা কয়লার ভিতরে এক ধরনের রাসায়নিক বন্ধন সৃষ্টি করে। আর যখনই এই কয়লার টুকরো কে আগুনের তাপ দিয়ে পোড়ানো হয় তখন কার্বন ডাই অক্সাইড, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের যে যৌগটি মিলে যে রাসায়নিক বন্ধন সৃষ্টি হয়েছিল সেটা ভেঙ্গে যায়।

আর সেটা ভেঙে যাওয়ার পর তাপের কারণে সেখান থেকে তাপ শক্তি হয়ে কার্বন ডাই অক্সাইড, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন বের করে। আমাদের গ্রহের মধ্যে লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি বছর ধরে মাটির নিচে যে সব পাথর গুলো চাপা পড়ে ছিল।

সেগুলো অতিরিক্ত চাপের কারণে এবং আমাদের পৃথিবীর অভ্যন্তরের যে তাপ উৎপন্ন হয় সে তাপের কারণে পাথর গুলো কয়লাতে পরিণত হয়ে গিয়েছিল। আর পাথর থেকে তৈরি হওয়া কয়লা গুলো মূলত আমরা আগেকার দিনে রেলওয়েতে ব্যবহার করতাম।

আর ব্যবহার করার কারণে যে রেলওয়ে ইঞ্জিন এর সাহায্যে এগুলো ব্যবহার করা হতো সেটাকে বলা হত বাষ্পীয় ইঞ্জিন।

 

বাষ্পীয় ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে?

একটি বাষ্পীয় ইঞ্জিনের মূলত চারটি ভিন্ন ভিন্ন যন্ত্রাংশ থাকে, যেগুলো সাহায্যে কাজ করে। প্রথম যন্ত্রাংশের মাধ্যমে বাষ্পীয় ইঞ্জিন কয়লা পুড়িয়ে থাকে আর এটাকে বলা হয় অগ্নিকুণ্ড। অগ্নিকুন্ড বাষ্পীয় ইঞ্জিনের কয়লা পুড়িয়ে সেটাকে একটি পানিভর্তি বয়লার এর ভিতর চাপ দিতে থাকে।

বয়লারের তাপ দেওয়ার কারণে পানি আসতে আসতে বাস্প হয়ে যায়। তৃতীয় ধাপে বাষ্পীয় ইঞ্জিন একটা সিলিন্ডার থাকে সেখানে একটি পিষ্ঠন থাকে। এই পিষ্টন ই মূলত পেট্রল এর ঘূর্ণন এ সাহায্য করে। একটু করে বাষ্প বয়লারে যায়। তারপর আসে বাষ্পীয় ইঞ্জিন এর সিলিন্ডারের পাইপের সাহায্যে আবার ভেতরের দিকে উঠে আসে।

এভাবে উঠে আসার কারণে পিস্টন একের পর এক পেট্রোল মারতে থাকে। পিষ্টনের সাথে এমন একটি মেশিন যুক্ত করা থাকে যেটা সাহায্যে বিভিন্ন কাজ করা যায়। এভাবেই যে ইঞ্জিন বাষ্পের সাহায্য কাজ করে থাকে তাই বাষ্পীয় ইঞ্জিন।

বাষ্পীয় ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে?

বাষ্পীয় ইঞ্জিন সাধারণত গতির উপর নির্ভর করে কাজ করে থাকে। আর এই গতির উপর নির্ভর করার কারণে বাষ্প ইঞ্জিন সাধারণত দুই প্রকারের হয়ে থাকে। একটি হলো সিঙ্গেল এক্টিং বাষ্পীয় ইঞ্জিন এবং অন্যটি হলো ডাবল এক্টিং বাষ্পীয় ইঞ্জিন।

যেটা সিঙ্গেল এক্টিং বাষ্পীয় ইঞ্জিন সেটা সাধারণত এক সাইড দিয়ে বাষ্প প্রবেশ করে থাকে।

অন্য দিকে যেটা হলো ডাবল এক্টিং বাষ্পীয় ইঞ্জিন সেটা আবার দুই দিক দিয়ে বাষ্প ভেতরে প্রবেশ করে। সাধারণত ডাবল এক্টিং বাষ্পীয় ইঞ্জিন সিঙ্গেল এক্টিং বাষ্পীয় ইঞ্জিন এর চেয়ে ও বেশি শক্তিশালী হয়ে থাকে।

আবার অন্যদিকে বাষ্পীয় ইঞ্জিন সিলিন্ডারের অবস্থানের উপর নির্ভর করে দুই প্রকারের হয়ে থাকে। যেমন একটি হল আনুভূমিক বাষ্পীয় ইঞ্জিন এবং অন্যটি হলো উলম্ব বাষ্পীয় ইঞ্জিন।

একটি সিলিন্ডার যখন বাষ্পীয় ইঞ্জিনের অক্ষের সমান্তরাল অবস্থানে থাকে। তখন ওই বাষ্প ইঞ্জিন কে আনুভূমিক বাষ্প ইঞ্জিন বলা হয়ে থাকে। এই আনুভূমিক বাষ্পীয় ইঞ্জিন বেশি জায়গা জুড়ে অবস্থান করে থাকে।

আবার একইভাবে বাষ্পীয় ইঞ্জিনের সিলিন্ডার যখন ইঞ্জিনিয়ার অক্ষের উপরিভাগে লম্বালম্বিভাবে অবস্থান করে থাকে। তখন আবার সেটাকে উলম্ব বাষ্পীয় ইঞ্জিন বলা হয়ে থাকে। আর এই উলম্ব বাস্পীয় ইঞ্জিন সব সময় আনুভূমিক বাস্পীয় ইঞ্জিন চেয়ে কম জায়গা গ্রহণ করে থাকে। এভাবেই বাষ্পীয় ইঞ্জিন কাজ করে থাকে।

শেষ কথা

আশা করি আপনি আমাদের আর্টিকেল এর মাধ্যমে খুব সহজেই বুঝতে পেরেছেন যে বাষ্পীয় ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে? এর পরও যদি কোন কিছু বুঝতে অসুবিধা হয় তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে আপনার সমস্যাটা সমাধান করে দেওয়ার চেষ্টা করবো। তো আজকের মত এ পর্যন্তই ছিল বাষ্পীয় ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে?

আর হ্যাঁ আপনি যদি নতুন কোন বিষয়ে নতুন কোনো আর্টিকেল চান, তাহলে উক্ত বিষয়টি কমেন্ট করে লিখে আমাদেরকে জানাতে পারেন। আমরা খুব শীঘ্রই আপনার বিষয়টি নিয়ে নতুন লেখা পাবলিশ করার চেষ্টা করব।

আজকের মত এ পর্যন্তই ছিল, দেখা হবে আবার নতুন কোন আর্টিকেলে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। ততক্ষণ পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ধন্যবাদ।

Updated: April 12, 2022 — 11:46 am