ফোনে ব্যাটারী সেভার কিভাবে কাজ করে – ব্যাটারি সেভার অ্যাপ গুলো কি সত্যিই কাজ করে!

বর্তমান সময়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে না এমন লোক পাওয়া খুবই দুস্কর। আর যারাই মোবাইল ফোন ব্যবহার করে তাদের মোবাইল ফোনে চার্জ থাকা টাই যেন সবকিছু। বাসা থেকে বের হয়েছে কোন দরকারে, কোন কাজে, অফিসে যাওয়ার সময়, অনেকে ট্যুরে যাওয়ার সময় প্রিয় ফোনটি সাথে করে নিয়ে যায়।

আর যখন কোন ছবি তুলতে হয় অথবা কোন কাজে ফোনটি ব্যবহার করা হয়। ঠিক তখনই যদি ফোনের চার্জ ফুরিয়ে যায় তাহলে যেন পুরো দিনটাই মাটি হয়ে যায়।

ফোনে ব্যাটারি সেভার কিভাবে কাজ করে

যে কারণে বর্তমান সময়ে সবাই যে কোন মোবাইল কেনার আগে অবশ্যই ব্যাটারির পাওয়ার দেখে থাকে। আর অন্যদিকে মোবাইল ফোন কোম্পানি গুলো ও বেশি বেশি ব্যাটারির পাওয়ার দেওয়ার চেষ্টা করে।

যেমন আগে স্মার্টফোনে 1,200mhp থেকে 2,500mhp ব্যাটারি ব্যাকআপ দিতো সেই জায়গায় বর্তমানে ৪ হাজার থেকে ৭হাজার এম্পিয়ার ব্যাটারি ব্যাকআপ দিয়ে থাকে। কারণ যাতে সবাই বেশিক্ষণ ফোনটি ব্যবহার করতে পারে।

কিন্তু তারপরে ও ব্যাটারির চার্জ সেভ করা অনেকের হয়ে পড়ে না। যে কারণে আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা আপনাদের বলব যে কিভাবে বেশিক্ষণ আপনার ফোনের ব্যাটারি সংরক্ষণ করে রাখবেন। যাতে করে আপনার ব্যাটারি চার্জ যখন তখন শেষ না হয়ে যায়।

ব্যাটারির চার্জ বাঁচানোর জন্য বর্তমানে অনেক ধরনের অ্যাপস প্লে স্টোরে পাওয়া যায়। তবে অনেকে ভাবেন যে অ্যাপস গুলো আসলেই অনেক কার্যকর এবং কার্যকর না এই বিষয় নিয়ে চলুন আগে জেনে নেওয়া যাক। প্রথম কথা হল কোন অ্যাপসই ব্যাটারি চার্জ বাঁচিয়ে রাখতে পারে না। আবার দ্বিতীয় কথা হল যেকোনো ব্যাটারির চার্জ বাঁচানোর অ্যাপস ই ফোনের ক্ষমতা বাঁচিয়ে রাখতে পারে।

হ্যাঁ আপনি ঠিকই শুনছেন অনেকগুলো অ্যাপস রয়েছে যেগুলো মাধ্যমে ব্যাটারি চার্জ সংরক্ষণ করা যায়। আবার অনেক গুলো রয়েছে যেগুলো শুধুমাত্র আপনাকে দিয়ে এড দেখে টাকা আয় করার জন্য বানানো হয়েছে। এটাকে এক প্রকার বলা যায় ভুয়া অ্যাপস বলা যায়।

তো এই সব অ্যাপস গুলো এমন ভাবে কাজ করে যাতে আপনার ফোনের ব্যাটারি বেশিক্ষণ ধরে সংরক্ষণ করা যায় বা সহজে যেন আপনার ফোনে চার্জ না শেষ হয়ে যায়।

ব্যাটারি সেভার অ্যাপ যেভাবে কাজ করে থাকে?

এখন অনেকের মনের মধ্যে হয়তো এই প্রশ্নটিই জাগছে যে, ব্যাটারি সেভার অ্যাপ গুলো কিভাবে কাজ করে যাতে করে আমাদের ফোনের ব্যাটারি চার্জ সহজে শেষ হয় না বা বেশিক্ষণ ধরে আমাদের ফোনে চার্জ থাকে।

আসলে আপনি যখন ব্যাটারি চার্জ সেভ করার জন্য অ্যাপস গুলো চালু করবেন তখন ব্যাটারির চার্জ সেভার অ্যাপস গুলো আপনার ফোনের ব্রাইটনেস কমিয়ে দিবে। আপনার বিভিন্ন অ্যাপস রয়েছে যেগুলো প্রচুর পরিমাণে ব্যাটারির চার্জ কাটে সেই অ্যাপস গুলো বন্ধ করে দিবে।

এছাড়াও ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেস মিনিমাইজ করা অ্যাপস গুলো কে জোর করে বন্ধ করে দিবে যাতে তারা অতিরিক্ত ব্যাটারির চার্জ ক্ষয় করতে না পারে। এভাবেই বিভিন্ন ধরনের ব্যাটারির সেভার অ্যাপস গুলো মূলত কাজ করে থাকে।

যেমন, DU Battery Saver, AccuBattary, Battery Doctor, 2 Battery সহ আরো অনেক অ্যাপস রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে ব্যাটারির চার্জ বাঁচানো যায়।

একটা জিনিস হয়ত খেয়াল করেছেন যে অ্যাপস গুলো কোনোভাবেই অটোমেটিক ভাবে ব্যাটারির চার্জ সংরক্ষণ করে না। পুরোটাই সংরক্ষণ করে আপনার মাধ্যমে ম্যানুয়ালি পদ্ধতিতে। আপনি বিভিন্ন ধরনের ব্যাটারি সেভার অ্যাপস ছাড়াও আপনার ফোনের ব্যাটারি চার্জ বেশিক্ষণ সংরক্ষণ করতে পারবেন।

এজন্য আপনাকে কয়েকটি কাজ করতে হবে যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো;

১. ডিসপ্লে ব্রাইটনেস,

২. ম্যানেজমেন্ট,

৩. নোটিফিকেশন,

৪. ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপস।

এরকম আরো কয়েকটি সেটিংস রয়েছে যেগুলো আপনি অফ করে, অটোমেটিক ভাবে কোন অ্যাপস ছাড়াই আপনার ফোনের ব্যাটারি চার্জ বেশিক্ষণ সংরক্ষণ করতে পারবেন।

ডিসপ্লে ব্রাইটনেস (Display Brightness)

আপনি যদি কখনো আপনার ফোনের ব্রাইটনেস হাই করে রাখেন তাহলে আপনার ব্যাটারির আয়ু ব্রাইটনেসের কারনে প্রচুর কমে যেতে পারে।

এছাড়াও এ ব্রাইটনেস চালু করার কারণে আপনার ফোনের চার্জ খুব দ্রুতই শেষ হয়ে যেতে পারে। যে কারণে খুব সহজেই আপনি আপনার ডিসপ্লের ব্রাইটনেস সব সময় এক থেকে দশের মধ্যে রাখবেন।

এছাড়া অতিরিক্ত কোনো কারণ ছাড়া কখনই অধিক ব্রাইটনেস সবসময় অন করে রাখবেন না। এর কারনে আপনার ব্যাটারি আয়ু কমে যেতে পারে সেই সাথে আপনার চোখে ও সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

অ্যাপস মানেজমেন্ট (Apps Management)

আপনার ফোনে এমন অনেকগুলো অ্যাপস রয়েছে যেগুলো প্রচুর পরিমাণে যেমন ব্যবহার করেন ঠিক তেমনি এসব অ্যাপস শুধুমাত্র ইনস্টল করে মাসের পর মাস বছরের পর বছর ফেলে রাখেন।

এই অ্যাপ গুলো আপনার ফোনে আপনার অজান্তেই অনেক চার্জ ক্ষয় করে থাকে। যখন আপনি ডাটা চালু করেন তখনই আপনার ফোনের চার্জ এসব অ্যাপস গুলো অটোমেটিক ভাবেই ব্যাটারি চার্জ শেষ করতে থাকে।

তাই, কখনোই এসব অ্যাপস শুধু শুধু ইনস্টল করে রাখবেন না। সে সব অ্যাপগুলো আনইন্সটল করে রাখবেন যখন ব্যবহার করা প্রয়োজন পড়বে তখন আবার ইন্সটল করবেন এতে করে আপনার ব্যাটারি চার্জ সেভ হবে।

নোটিফিকেশন (Notification)

ক্রোম ব্রাউজার, ইউসি ব্রাউজার কিংবা ভিডমেট অ্যাপস গুলো যারা ব্যাবহার করেন তাদের ফোনে প্রচুর পরিমাণে ভুয়া ও আজেবাজে নোটিফিকেশন আসে। বিভিন্ন ধরনের এসব নোটিফিকেশন গুলো স্পাম নোটিফিকেশন। এই অ্যাপ গুলোর এসব নোটিফিকেশন আপনার ফোনের চার্জ প্রচুর পরিমাণে ক্ষয় করে থাকে।

যতটা সম্ভব এই সব অ্যাপস গুলো মিনিমাইজ করে রাখবেন যাতে করে আপনার ফোনে অতিরিক্ত চার্জ শেষ করতে না পারে। এতে করে আপনার ফোনের ব্যাটারির চার্জ বেশিক্ষণ স্থায়ী থাকবে।

ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপস (Background Apps)

ব্যাটারির চার্জ ব্যাকগ্রাউন্ডে থাকা বেশিরভাগ অ্যাপস গুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষয় করে। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা যেকোনো অ্যাপস ব্যবহার করার পর সেই অ্যাপস সামনে থেকে কাটে না। সেটাকে তারা ডিসপ্লের সামনে রেখে দেয়। আপনি হয়ত জানেন না যে, এই অ্যাপস গুলো আপনার অজান্তেই ফোনের চার্জ ক্ষয় বা শেষ করতে থাকে।

একসময় আপনার ফোনে চার্জ শেষ হয়ে গেলে অ্যাপস গুলো বন্ধ। যেকোনো অ্যাপস ব্যবহার করার পর ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে সবগুলো অ্যাপস রিসেট করে দিবেন। তাহলে দেখবেন আপনার ফোনের ব্যাটারির চার্জ বেশিক্ষণ থাকবে।

শেষকথা

আজকের এই আর্টিকেলে ফোনে ব্যাটারী সেভার কিভাবে কাজ করে বা ব্যাটারি সেভার অ্যাপ গুলো সহ ব্যাটারি সম্পর্কে নানা তথ্য শেয়ার করার চেষ্টা করেছি। আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন।

তারপরে যদি কোন কিছু বুঝতে অসুবিধা হয় তাহলে তো কমেন্ট বক্সে রয়েছে যেকোনো সমস্যা হলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

আবার হাজির হবো নতুন কোন আর্টিকেল নিয়ে ততক্ষণে সবাই আমাদের অন্যান্য আর্টিকেল গুলো উপভোগ করতে পারেন।

Updated: March 15, 2022 — 9:44 pm