মুখস্ত জ্ঞানের চেয়ে , বাস্তব জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা এর কার্যকারিতা বেশি!!

মুখস্ত জ্ঞান ও বাস্তব জ্ঞান দু’টো শব্দের ভিতর আসমান জমিন ব্যবধান রয়েছে। যারা শিক্ষার্থী এছাড়াও যারা জীবন সংগ্রামে লড়ছেন তাদের কাছে এই দুটো শব্দের গুরুত্ব অনেক বেশি। বই পড়ে জীবনের সব সাফল্য যদি অর্জন করা যেত তাহলে পৃথিবীর কোন মানুষই গরিব থাকত না। হ্যাঁ বন্ধুরা আজকের ব্লগটা কোন ইনফরমেশন এর ব্লগ নয় বাস্তব কিছু উদাহরণ নিয়ে আপনাদের সামনে কিছু কথা বলবো এইটুকুই। আজকে পুরোটা জুড়েই আমি আছি আপনাদের সামনে রাকিবুল হাসান, কিছু মজার মজার ঘটনা নিয়ে।

চলুন একটা গল্প দিয়ে শুরু করা যাক, যখন দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ চলছিল তখন দুজন অভিজ্ঞ পাইলটদের বাছাই করা হলো। এবং তাদের ওপর দায়িত্ব দেওয়া হল কিভাবে যুদ্ধ পরিচালনা করবে এবং সৈন্য বাছাই করবে সে সব সম্পর্কের তত্ত্বাবধান করার জন্য। তাদের মধ্যে একজন ছিল খুবই অভিজ্ঞ এবং অনেক পুরাতন একজন পাইলট। এবং আরেকজন ছিল নতুন কিন্তু সে অনেক দক্ষ এবং অনেক পারদর্শী ও বটে।

তারা দুজনে দুটো দলই তাদের পছন্দনীয় সৈন্যদের নিতে শুরু করে। যখন যুদ্ধ চলছিল, তখন দেখা গেল নতুন পাইলটের পছন্দকৃত যে সৈন্য গুলো ছিল তারা মারা যাচ্ছে। অর্থাৎ যুদ্ধের ময়দানে তারা শহীদ হচ্ছে। অপরদিকে দেখা গেল অভিজ্ঞ পাইলটের সৈন্য গুলো খুব ভালোভাবেই যুদ্ধ পরিচালনা করছে।

পরবর্তীতে নতুন পাইলট যুদ্ধ শেষে অভিজ্ঞ পাইলটকে জিজ্ঞেস করল, “আপনি কিভাবে আপনার সৈন্য নির্বাচন করেছেন?” উত্তরে অভিজ্ঞ লোকটি বলল, আমি শুধুমাত্র তাদের একটি প্রশ্ন করেছিলাম। বলেছিলাম, “তোমাদের দিকে যখন মিসাইল ছুড়ে মারা হবে তখন তোমরা কি করবে?”এক্ষেত্রে আপনিও জানেন যখন মিসাইল ছুড়ে মারা হয় তখন যুদ্ধবিমান উপরের দিকে নিয়ে যেতে হয়। এটা বইয়ের ভাষায়। অভিজ্ঞ পাইলোট লোকটি বলল, “যারা যারা আমাকে এই বইয়ের উত্তরটি দিয়েছে তাদেরকে আমি নেই নি”

উত্তর শোনার পর নতুন পাইলট পুরোপুরি হতবাক হয়ে গেল। উনি অভিজ্ঞ পাইলটকে জিজ্ঞেস করল এটা আবার কেমন কথা? উনারা তো সঠিক উত্তরটি আপনাকে বলেছে তাহলে আপনি উনাদের কে কেন গ্রহণ করেননি? তখন অভিজ্ঞ পাইলট বলল, যুদ্ধের ময়দানে বই অনুসরণ করলে অবশ্যই মৃত্যুবরণ করতে হবে। এবং আমি সেই ফর্মুলা অনুসরণ করেছি।

আপনারা বুঝতেই পারছেন বাস্তব জ্ঞান এবং পড়াশোনায় উপার্জিত জ্ঞান কেন দুটি সমান জিনিস নয়। বাংলাদেশে এমন অনেক লোক রয়েছে যারা সারাদিন পড়াশোনা করে ,অনেক কিছু জানে। কিন্তু তারা এটা জানে না কিভাবে দশটা লোকের সাথে ভালোভাবে কথা বলতে হয়। আপনি চাইলে বাস্তবতা মিলিয়ে দেখতে পারেন। আপনি যে পথেই হাঁটেন না কেন আপনাকে অবশ্যই বাস্তব জ্ঞান ও দক্ষতা থাকতে হবে। কারণ জীবনের সবকিছুই বইয়ের জ্ঞান দিয়ে হয়না। যদি তাই হতো তাহলে আজকে, সমাজ জীবনে এত তারতম্য আমরা দেখতে পেতাম না। কারণ বাংলাদেশের অধিকাংশ লোকই বর্তমানে শিক্ষিত।

একটি ইঞ্জিনিয়ার ছিল, যে একটি বিল্ডিং এ কাজ করতেছিল। বিল্ডিং এর সমস্ত লোকজন এর একটি অভিযোগ ছিল লিফট অনেক স্লো চলে। অর্থাৎ লিফট দ্রুত গতিতে কাজ করে না। এটা নিয়ে অনেক ইঞ্জিনিয়ার অনেক চেষ্টা করেছে কিন্তু কেউ কিছু করতে পারেন নি। কিন্তু ওই ইঞ্জিনিয়ার এটি একটি অভিনব বুদ্ধি অনুসরণ করেছিল। সবাই বলে লিফটের ইঞ্জিন চেঞ্জ করতে হবে। লিফটের অন্যান্য যন্ত্রাংশ আরো উন্নতি করতে হবে। লিফটের লোকজন এত বেশি নেওয়া যাবে না।

আরো অনেকে আরও অনেক উপদেশ দেওয়া শুরু করে। কিন্তু ওই ইঞ্জিনিয়ার টি বলল-আপনার লিফটের চারপাশের দেওয়ালে আয়না লাগিয়ে দিন। এটা শুনে সবাই অবাক হয়ে গেল। আপনি ভেবে দেখুন জগতে আপনি যাকে সুন্দর দেখছেন সে আপনার কাছে ঠিকই সুন্দর। কিন্তু আপনি কি জানেন আপনি কার কাছে সুন্দর?

হ্যাঁ বন্ধুরা আপনি আপনার নিজের কাছে অনেকটা সুন্দর। এই জীবনটাকে সুন্দর ভাবে উপভোগ করার জন্য আপনি দেখতে পারেন আপনার চেয়ে সুন্দর পৃথিবীতে কেউ নেই। বিশ্বাস হচ্ছে না? আচ্ছা আমি একটা উদাহরণ দিয়ে আপনাদের বুঝিয়ে দিচ্ছি।

আপনি এখন এই ব্লগ টি পড়া শেষে আয়নার সামনে যাবেন। আয়নার সামনে গিয়ে আপনি আপনার নিজেকে দেখবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি জানেন আপনি আপনার নিজেকে দেখছেন এবং আপনার মনে মনে একটা চিন্তা অবশ্যই আসবে, আর সেটা হলো আপনাকে দেখতে কেমন দেখাচ্ছে। যদি বিশ্বাস না হয় আমার কথাটা মিলিয়ে দেখবেন।

আপনি আয়নার সামনে গিয়ে একবার হলো আপনার মুখের দিকে তাকিয়ে ভাববেন আমাকে ভালো দেখাচ্ছে কিনা? এছাড়াও যারা স্মার্ট ছেলে আছে না তারা তো আয়নার সামনে গিয়ে চুল আঁচড়ানো শুরু করে দেবেন। যারা মেয়ে আছেন তারা দেখবেন আপনার মেকআপ ঠিক আছে কিনা? আসলে এতে লজ্জার কিছু নেই বা অসন্তুষ্ট কিছু নেই। কারণ আপনি আপনার নিজেকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন। এবং যখনই আপনি সুযোগ পান আপনার নিজেকে যখনই আপনি দেখেন, তখনই ভাবতে থাকেন আসলে কি আমাকে সুন্দর লাগছে?

হ্যাঁ বন্ধুরা দেখুন কথাগুলো আসলে বই-পুস্তকে কোথাও পাবেন না। আরে এগুলো আমাদের শিক্ষাগত যে ধরনটা আছে তার ভিতর এগুলো শেখানো হয় না। এগুলো সবই বাস্তব জ্ঞান আপনাকে অবশ্যই এগুলো গ্রহণ করতে হবে। আপনার নিজের জীবনকে সুন্দর রঙিন ও স্বাবলম্বী করার জন্য এগুলো অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সব সময় বাস্তবতা খোঁজার চেষ্টা করবেন। ভাববেন কোথায় কি রয়েছে এবং আমি কোন জায়গায় কি কথা বলছি।

আমি ধরে নিচ্ছি আপনি অনেক ভাল ইংলিশ পারেন। ইংলিশ গ্রামার এর যেকোন সমস্যা আপনি খুব সহজেই সমাধান করে ফেলতে পারেন। কলেজে, স্কুলে, ইউনিভার্সিটি তে আপনার চেয়ে ভালো ইংলিশ কেউ পারেনা। কিন্তু একদিন হঠাৎ করে বন্ধ বান্ধব আপনাকে জোর করে একটি স্টেজে তুলে দিল। আর বলল বন্ধু আজকে তোর একটা ইংলিশে বক্তব্য শুনব বল। তখন দেখবেন অধিকাংশ মানুষেরই পা কাঁপা শুরু করে দেয়।

যে লোকটা ইংলিশে এত ভালো ইংলিশে সব সময় 100 নাম্বারের ভিতরে 90 এর নিচে পায়না। আজ সেই লোকটা ইংলিশে কথা বলতে ভয় পাচ্ছে। বিষয়টা অনেকটা মজাদার। সুতরাং আমি বলবো বাস্তব জ্ঞান গুলো আহরণ করার চেষ্টা করুন বর্তমান সময়ে বাস্তব জ্ঞান ছাড়া কোন প্রকার লাভ নেই।

ভালো থাকবেন বন্ধুরা আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন আছে কি বলতে চাচ্ছিলাম। ধন্যবাদ ভাল থাকবেন ,সুস্থ থাকবেন ,আসসালামু আলাইকুম।

 

Updated: April 8, 2022 — 5:51 pm