রোজার সময় খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত খাদ্য গুলো কি কি হতে পারে?

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন আপনারা সবাই। আপনাদের সবাইকে জানাই পবিত্র রমজান মাসের শুভেচ্ছা। আজকে রমজান মাসের প্রথম রোজা। এবং খুব ভালো লাগছে দীর্ঘ একটি বছর পর আবার আমরা পবিত্র মাসটি পেলাম। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের তৌফিক দান করুক যাতে করে আমরা এই বছরের 30 টি রোজা সুন্দর ভাবে সুস্থ ভাবে পালন করতে পারি। আমিন।

মূলত আজকে আপনাদের মাঝে যে জিনিসটা নিয়ে আসলাম সেটা হলো আপনাদের সুস্থতা বিষয়ে কিছু কথা। দেখুন পবিত্র রমজান মাসে অনেকের অফিস খোলা থাকে কাজ করতে হয়। সুতরাং রমজান মাসে রোজা রেখে অনেক পরিশ্রম হয় আপনাদের। কিন্তু অবশ্যই এর জন্য আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে আপনাদের খাবার তালিকার ওপর। আপনাদের দৈনন্দিন সেহরি এবং ইফতার, এই দুইটি সময় আপনারা কি কি খাচ্ছেন এসব বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া আবশ্যক যদি আপনারা সুস্থ থাকতে চান পবিত্র রমজান মাসে।

আজকে পোস্টটিই মূলত এটি নিয়ে আপনারা কোন কোন খাবারগুলো খেতে পারেন। কোন কোন খাবারগুলো সেহরির সময় খেলে আপনাদের অনেক উপকার হবে শরীরের জন্য অনেক ভালো হবে সেসব বিষয় নিয়ে কথা বলবো।

সেহরিতে আপনারা কি কি খাবেন?

দেখুন সেহরিতে কি খাবেন এই বিষয়টা নির্দিষ্ট করে বলার মতো কিছু নেই। সবার অর্থনৈতিক বিষয়টা একই নয়। সুতরাং সবার দিক বিবেচনা করে আমার মধ্যে যেটা সবচেয়ে ভালো হয় সেটা আপনাদের মাঝে তুলে ধরছি।

দেখুন প্রথমে বলে রাখি অনেকের একটা ভ্রান্ত ধারণা থাকে, সেহরিতে বেশি খেলে সারাদিন ক্ষুধা লাগে না। আসলে কথাটা ভুল সেহরিতে আপনি পেট ভরে না খাওয়াই ভালো। কারণ সেক্ষেত্রে আপনার হজমে সমস্যা হতে পারে। কিন্তু আপনি যদি নির্দিষ্ট পরিমাণ কিছু খাবার খান সুন্দর করে চিবিয়ে তাহলে অবশ্যই আপনার শরীরের জন্য সেটা অনেক ভালো হবে।

আপনি সেহরির সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে জিনিসটা খাওয়ার পরামর্শ দিব সেটা হচ্ছে দুধ। মূলত দেখুন দুধ এমন একটি খাদ্য উপাদান যেটির মাঝে খাদ্যের ছয়টি উপাদান বিদ্যমান। অর্থাৎ সুষম খাদ্য তৈরি করতে যে 6 টি উপাদান প্রয়োজন সেই 6 টি উপাদান এর মধ্যে সব কয়টি দুধে পাওয়া যায়। এছাড়াও আপনারা প্রোটিন জাতীয় খাবার গুলো খেতে পারেন। যেখান থেকে আপনারা পলি নিউক্লিও হাইড্রোকার্বন পেয়ে যাবেন অনেক পরিমান। যেটা আপনাকে সারাদিন অনেক শক্তি যোগান দেবে।

এছাড়া আপনি চাইলে গ্লুকোজ খেতে পারেন। আপনারা জানেন আমাদের শরীরের জন্য গ্লুকোজ অত্যাবশ্যকীয় একটি উপাদান। আপনার শরীরকে কর্মক্ষম রাখা থেকে শুরু করে সকল কাজে শক্তি প্রদান করার জন্য গ্লুকোজ অত্যন্ত জরুরী। এবং আমি বলব বেশি পরিমাণ পানি না খেয়ে হয়তো চার থেকে পাঁচ গ্লাস পানি আপনি খাবার শেষে খেতে পারেন। এটা অবশ্য আপনার শরীরের জন্য অনেকটা ভালো হবে।

চেষ্টা করবেন প্রোটিন জাতীয় খাবার গুলো সবচেয়ে বেশি খাওয়ার জন্য। সব সময় চেষ্টা করবেন তৈলাক্ত জাতীয় খাবার গুলো বর্জন করার জন্য। অবশ্যই আপনারা কেউ সফট ড্রিংক খাবেন না। এগুলো খেলে অবশ্যই আপনার গ্যাসট্রিকের সমস্যা হতে পারে।

খাবার তেল ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্ক থাকবেন অতিরিক্ত খাবার তেল ব্যবহার না করাই ভালো। অর্থাৎ আমি এক্ষেত্রে বলছি না আপনারা খাবার তেল একেবারেই খাবেন না। অবশ্যই খাবার তেল জরুরি আপনার শরীরের জন্য কিন্তু অতিরিক্ত মাত্রায় সেটা যাতে আপনার শরীরে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। এবং ভাত এত বেশি পরিমাণ খাওয়ার দরকার নেই যেটুকু আপনার দরকার ঠিক সেটুকুই ভাত খান।

ইফতারের সময় কোন কোন জিনিস গুলো খাওয়া যায়?

দেখুন বাংলাদেশের বর্তমান সময়ে ইফতার করার জন্য আপনারা যারা ব্যাবহার করেন মুড়ি ,বুট ,পিয়াজু, হালিম, বিরিয়ানি, বেগুনের চপ, আলুর চপ, বোনদা ভাজা, জিলাপি আরো অনেক কিছু।

মূলত খাবারগুলো এতটাও স্বাস্থ্যসম্মত না হওয়া সত্ত্বেও খাওয়া যায় কিন্তু সে ক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে আপনি অধিকাংশ জিনিসই ভাজিপোড়া জিনিস খাচ্ছেন। সুতরাং সেই ক্ষেত্রে তেলের বিষয়টা অবশ্যই খেয়াল রাখবেন অতিরিক্ত তেল যাতে এখানে ব্যবহার করা না হয়। ইফতারের সময় চেষ্টা করবেন আপনার শরীরটা কিভাবে খুব তাড়াতাড়ি কিভাবে শক্তি ফিরিয়ে আনা যায় সেই বিষয়টার উপরে।

এই কথাটা বলার কারণটা হলো আপনারা অবশ্যই পবিত্র রমজান মাসে তারাবি পড়বেন। সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাদের শারীরিক ভাবে প্রস্তুত থাকতে হয়। সুতরাং আপনাদের ইফতারের খাবার দাবার এর বিষয়ে অবশ্য একটু সতর্ক থাকবেন। আপনারা ইফতারে স্যালাইন খেতে পারেন। যদি আপনার শরীরটা দুর্বল হয়। অবশ্য রোজা রেখে শরীর দুর্বল হওয়া টা অনেকটা স্বাভাবিক কিন্তু আমি বলব স্যালাইন না খেয়ে আপনারা যদি গ্লুকোজ খান সে ক্ষেত্রে অনেক ভালো হয়।

কারণ অন্য কোন সমস্যা ব্যতীত স্যালাইন যদি খাওয়া হয় তাহলে আমাদের দেহে কিডনি এর মধ্যে অনেকটা সমস্যা হয়। এছাড়া ভুলেও আপনারা কেউ ইফতারের সময় কোকাকোলা ,সেভেন আপ, এসব সফট ড্রিংক খাবেন না।

এগুলো খেলে আপনাদের অনেক সমস্যা হবে এবং সেহরিতে ঠিকমতো হয়তো খাওয়া-দাওয়া নাও করতে পারেন সুতরাং এসব বর্জন করবেন। আপনারা একটা জিনিস খেতে পারেন সেটা হল জিলাপি এটা আপনাদের খুব ভাল কাজে দেবে শরীরের জন্য।

এবং আমাদের বাংলাদেশ অনেক লোক রয়েছে জিলাপি খেতে অনেক পছন্দ করে মিষ্টি জাতীয় জিনিস এর ভেতরে গ্লুকোজ থাকে অনেক পরিমান সেটা আপনারা সবাই জানেন। সুতরাং আপনারা চেষ্টা করবেন মিষ্টি জাতীয় জিনিস গুলো বেশি খাওয়ার জন্য। ইফতারে খেজুর খাওয়া টা অনেক বেশি জরুরী এক হিসেবে ধরতে গেলে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ ইফতারের সময় খেজুর খেতেন। এবং খেজুর আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী ইতিমধ্যেই বিজ্ঞানীরা এটা প্রমাণ করেছেন।

সুতরাং আপনারা খেজুর ইফতারে অবশ্যই খাবেন। এছাড়াও আপনারা চাইলে রুহ্ আফজা খেতে পারেন। এই জিনিসটাও অনেক ভালো আপনার শরীরের জন্য আপনার শরীরকে সতেজ এবং স্বাচ্ছন্দ রাখতে সাহায্য করবে।

পবিত্র রমজান মাসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা নিয়ে আপনাদের মাঝে আসতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। অবশ্য আজকে রোজা রেখে এসব কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে না কারণ এসব কথা যারা পড়বেন হয়তো যদি কারো উপকার হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে আমি মনে করব আমি সার্থক।

সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি এই রমজান মাসে সবাই পবিত্র ত্রিশটি রোজা আল্লাহর রহমতে সুন্দরভাবে পালন করেন। এবং 30 টা রোজার শেষে আপনারা হাসিখুশি মন নিয়ে পরিবারসহ ঈদ করবেন। আপনাদের সুস্বাস্থ্য কামনা করে শেষ করছি আসলামু আলাইকুম।

 

Updated: April 3, 2022 — 9:52 pm