বিটকয়েন কি?কেন বিটকয়েন ব্যবহার করা হয়?

বিটকয়েন কি তা অধিকাংশ লোক জানে না? আসলে বিটকয়েন হলো ব্লকচেইন বেসিস বিকেন্দ্রীভূত ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ডিজিটাল মুদ্রা, যেই কারেন্সি একদম স্বাধীন ও এটি নিয়ন্ত্রন করার জন্য কেন্দ্রীয় কোন অথরিটি নেই এবং এই কারেন্সি কোন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রা নীতি মানে না। শুধুমাত্র যারা বিটকয়েন ব্যবহার করে তাদের মধ্যে এই ধরনের কারেন্সির লেনদেন হয়ে থাকে।

আপনি যদি ক্রিপ্টোকারেন্সির একজন ইনভেস্টর হয়ে থাকেন কিংবা ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রতি ইন্টারেস্টেড হয়ে থাকেন তাহলে আপনি অবশ্যই বিটকয়েন এর ফিচার্স এবং ভবিষ্যৎ কি হবে সে বিষয়ে অবগত আছেন। সেই সাথে বিটকয়েন কতটা নিরাপদ সেটাও আপনি নিশ্চয় জানেন?

এই ধরনের অসংখ্য অসংখ্য প্রশ্নের জবাব সহজে জানতে পারবেন। কাজেই আপনি বুঝতে পারছেন যে, আজকের পোস্টে বিটকয়েন এর আধীঅন্ত নিয়ে আলোচনা করব বিধায় আপনি বিটকয়েন সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারনা পাবেন।আমরা এখন ২১ শতাব্দির অত্যাধুনিক মানুষ বিধায় প্রতিনিয়ত কারেন্সি ব্যবস্থায় আধুনিকতা নিয়ে আসছি। ইন্টারনেটের সহজ লভ্যতার কারনে আজ আমাদের জীবন মান খুব সহজ হয়ে উঠেছে।

আজ থেকে মাত্র ৫ বছর পূর্বে ইন্টারনেটে থেকে টাকা ইনকাম করার বিষয়টি বললে অধিকাংশ লোক হাসি ঠাট্টা করত। কিন্তু এখনকার সময়ে ঘরে বসে ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন উপায়ে টাকা ইনকাম করা যায় এই বিষয়টা সবাই বিশ্বাস করে। ঠিক একইভাবে বিটকয়েন মাইনিং করে বা বিটকয়েন ক্রয় করেও ইন্টারনেট থেকে মোটা অংকের টাকা ইনকাম করা সম্ভব।

প্রাচীনকালের মানুষ পন্য বিনিময় করতো, অর্থাৎ চালের বিনিময়ে ডাল এবং ডালের বিনিময়ে চাল ইত্যাদি বিনিময় করতো। তারপর সভ্যতার উন্নতির সাথে সাথে বিনিময় প্রথায় উন্নতি সাধনের সাথে সাথে কপার, ধাতব বস্তু, পিতল ও স্টিলের মুদ্রার প্রচলন শুরু করে। আর বর্তমানে কাগজের মুদ্রার বেশি প্রচলনের পাশাপাশি ডিজিটাল কারেন্সি ব্যবস্থার প্রচলনও শুরু হয়েছে।

বিটকয়েন কি?

বিটকয়েন সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার পূর্বে আপনাকে কারেন্সি এর ইতিহাস জেনে নিতে হবে। তাহলে আপনি সহজে বুঝতে পারবেন কিভাবে আমাদের জীবনে বিভন্ন ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি স্থান করে নিচ্ছে এবং কিবাবে ভবিষ্যতে টাকার পরিবর্তে ডিজিটাল কারেন্সি হবে মানব জীবনের লেনদেনের হাতিয়ার। So let’s started and know all everything about Bitcoin and Cryptocurrency.

প্রাচীনকালে মানুষ কোন দ্রব্য কেনার জন্য পন্য বিনিময় করতো। তারপর চালু হয় কপরা, সিলভার, গোল্ড কয়েন, কাগজের টাকা। সবশেষ বর্তমানে চালু হয়েছে ডিজিটাল কারেন্সি হিসেবে প্লাস্টিকের কার্ড অর্থাৎ ডেভিড কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড। সবশেষ আবিষ্কার হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি বা বিটকয়েন যেটা পৃথিবীর যে কোন প্রান্থ থেকে সহজে ব্যবহার করা যায়।

বিটকয়েন হচ্ছে এক ধরনের ডিজিটাল ভার্চুয়াল কারেন্সি। আমরা যেভাবে টাকা এবং ডলার ব্যবহার করে কোন কিছু কিনতে পারি, ঠিক একইভাবে বিটকয়েন ব্যবহার করেও যে কোন কিছু কেনাকাঠা করা যায়। তবে বিটকয়েন এবং টাকার মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে যে, টাকার ফিজিক্যাল পার্টস রয়েছে যেটা স্পর্শ করা যায় কিন্তু বিটকয়েন এর কোন ফিজিক্যাল পার্ট নেই। কাজেই অন্যান্য করেন্সির মত বিটকয়েন ধরা যায় না বা স্পর্শ করা যায় না।

বিটকয়েন এর সবচাইতে বড় সমস্যা হচ্ছে বিটকয়েন এর কোন কেন্দ্রিয় অথরিটি নেই এবং বিটকয়েন কোন সরকার বা রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংক এর নিয়ন্ত্রন নেই। বিটকয়েন যারা ব্যবহার করে কেবলমাত্র তাদের মধ্যে আদান প্রদান হয়ে থাকে। তবে বিটকয়েন খুবই সুনিয়ন্ত্রিত এক ধরনের কারেন্সি ব্যবস্থা। অর্থনিতিবিধরা ধারনা করছে যে, বিটকয়েন হতে পারে ভবিষ্যতের সবচাইতে ডিমান্ডএবল ডিজিটাল করেন্সি।

কেন বিটকয়েন ব্যবহার করা হয়?

বিটকয়েন ব্যবহার করে যে কোন ধরনের অনলাইন পেমেন্ট এবং ট্রান্সজেকশন করা যায়। সাধারণত বিটকয়েন পার-টু-পার নেটওয়ার্ক বেসিস লেনদেন হয়ে থাকে। অর্থাৎ কোন ধরনের ব্যাংক, কোম্পানি এবং ক্রেডিট কার্ড ছাড়াই সরাসরি বিটকয়েন লেনদেন করা যায়।

বিটকয়েন এর সবচাইতে বড় সুবিধা হচ্ছে যে, এটা দিয়ে খুব সহজে এবং দ্রুত লেনদেন করা সম্ভব হয়। বর্তমানে অধিকাংশ অনলাইন ডেভেলপাররা কোন কাজ করার ক্ষেত্রে বিটকয়েন পেমেন্ট করার জন্য দাবী করেন। যার কারনে বিটকয়েন বিশ্বের অন্যান্য পেমেন্ট সিস্টেমকে পিছনে ফেলে ধিরে ধিরে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

আমরা যখন কোন ধরনের পেমেন্ট করে থাকি তখন কোন না কোন একটি ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে আমাদের পেমেন্ট সরাসরি হাতে পেয়ে থাকি। যার কারনে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বা যে কোন দেশের সরকার লেনদেনের উপর নজরদারি করতে পারে। কিন্তু বিটকয়েন এর সবচাইতে বড় সুবিধা হচ্ছে বিটকয়েন এর লেনদেন তৃতীয় কোন ব্যক্তি জানতে পারে না। শুধুমাত্র যাদের মধ্যে লেনদেন হয় কেবলমাত্র সেই দুই পক্ষ লেনদেন ও লেনদেনের পরিমান জানতে পারে।

বিটকয়েন ওয়ালেট কি?

যেহেতু বিটকয়েনের কোন ফিজিক্যাল পার্ট নেই সেহেতু বিটকয়েন কোন ব্যাংকে জমা রাখা যায় না। বিটকয়েন শুধুমাত্র অনলাইন ওয়ালেট হিসেবে কম্পিউটার, মোবাইল ও ডিজিটাল ডিভাইসে জমা রাখা যায়। বলতে পারেন বিকাশে এবং নগদে এ্যাপসে টাকা জমা রাখার মতন।

সাধারণরত বিটকয়েন ওয়ালেটের একটি ইউনিক আইডি থাকে। সেই ইউনিক আইডি ব্যবহার করে বিটকয়েনের লেনদেন করা সম্ভব হয়। আপনি যদি কারো নিকট আপনার বিটকয়েন প্রেরণ করতে চান তাহলে যার নিকট বিটকয়েন প্রেরণ করবেন তার বিটকয়েনের এড্রেসের প্রয়োজন হবে। আর সেই এড্রেস ব্যবহার করে আপনি কাঙ্খিত একাউন্টে বিটকয়েন প্রেরণ করতে পারবেন।

আপনি যদি বিটকয়েন ক্রয় করতে চান কিংবা বিক্রয় করতে চান তাহলেও আপনার একটি বিটকয়েন ওয়ালেট প্রয়োজন হবে। তবে আপনার নিকট জমাকৃত বিটকয়েন সরাসরি ব্যাংকেও ট্রান্সফার করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে ব্যাংকে ট্রান্সফার করা সম্ভব হবে না। কারণ বাংলাদেশ সরকার এখনো পর্যন্ত বিটকয়েন অনুমোদন করেনি। এ ক্ষেত্রে আপনাকে ইউরোপ আমেরিকার কোন ব্যাংক একাউন্টের প্রয়োজন হবে। তবে আশাকরা যাচ্ছে খুব শীঘ্রই বাংলাদেশ সরকারও অফিসিয়ালিভাবে বিটকয়েন অনুমোদন করবে।

বিটকয়েন কে তৈরি করেছেন?

সর্প্রথম ২০০৯ সালে সাতোশি নাকামোতো নামক একজন ব্যক্তি বিটকয়েন আবিষ্কার করেন। সেই সময় বিটকয়েন এর তেমন মূল্য ছিল না বা বিটকয়েন মানুষ ব্যবহার করত না। কিন্তু কালক্রমে ২০০৯ সালের পর থেকে এখন বিটকয়েন এর জনপ্রিয়তা আকাশ চুম্বি অবস্থান করছে। এখন অধিকাংশ উন্নত দেশ বিটকয়েন এর ব্যবহারকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

তবে সাতোশি নাকামোতে কে বা তিনি একজন ব্যক্তি কি না বা একাধিক ব্যক্তি কি না সেই সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোন পরিচয় পাওয়া যায় না। অধিকাংশ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন সাতোশি নাকামোতো এর কাছে বর্তমানে প্রায় ১ মিলিয়ন এর বেশি বিটকয়েন রয়েছে। যার জন্য তাকেই বিটকয়েন এর নির্মামাতা বা আবিষ্কারক বলা হয়।

 

Updated: April 26, 2022 — 2:36 pm