মশা তাড়ানোর উপায় কি – ঘরোয়া পদ্ধতিতে মশা তাড়ানোর উপায়

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সামনে নিয়ে আসলাম নতুন একটি আর্টিকেল।

অনেকের একটি কমন প্রশ্ন হল মশা তাড়ানোর উপায় কি? আপনি যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলে খুব সহজেই আপনি ঘরোয়া উপায়ে মশা তাড়ানোর উপায় কি এটা জানতে পারবেন।

এতে করে আপনার অতিরিক্ত মশার হাত থেকে যেমন বাঁচতে পারবেন। ঠিক তেমনি বিভিন্ন কয়েল বা স্প্রে কেনার পর টাকা অপচয় করা হবে না।

কেননা প্রতিদিন কিন্তু মশার কয়েল সেইসাথে মশার স্প্রে এগুলো কেন একটা ব্যয়বহুলও ব্যাপার হয়ে উঠেছে। আর এ জন্যই আজকে আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করব ঘরোয়া উপায়ে মশা তাড়ানোর কয়েকটি সেরা উপায় নিয়ে।

তো চলুন দেরী না করে জেনে নিই মশা তাড়ানোর উপায় কি সম্পর্কে সকল তথ্য সমূহ।

 

মশা তাড়ানোর উপায় কি

ছোট্ট একটি যন্ত্রণাদায়ক পোকা বা পতঙ্গের নাম হলো মশা। মশার উপদ্রব থেকে যেমন বিভিন্ন ধরনের রোগ জীবাণু সংক্রমণ হয় ঠিক তেমনি মশার কামড়ে রাতের ঘুমটাই নষ্ট হয়ে যায়।

এই একটু পর পর মশার কামড় কি যে বিরক্তি আর যন্ত্রণাদায়ক সেটা মশার কামড় খেলে রাত্রেই বোঝা যায়। যদি না একদিন কয়েল অথবা মশারী টাঙ্গানো হয় তাহলে ওই দিন ঘুম তো দূরের কথা ঘুমের ঘ টা ও আসে না।

অনেক সময় মশার কারণে বিভিন্ন ধরনের রোগ-জীবাণু হয়। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো চিকুনগুনিয়া, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, পীতজ্বর, জিকা ভাইরাস সহ আর নানান ধরনের রোগ-জীবাণু আমাদের মানব দেহে মশার মাধ্যমে ছড়ায়।

আপনি হয়তো জানেন যে প্রতিবছর অনেক মানুষ আমাদের দেশে মশার কামড়ে মশা থেকে ছড়ানো রোগ-জীবাণুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।

মশা এমন একটি ছোট্ট পতঙ্গ যার কামড়ে মানুষ এমনকি মারা পর্যন্ত ও যেতে পারে। এজন্য সবারই উচিত সঠিকভাবে মশা নিধন করা যাতে করে বড় কোন ধরনের রোগ-জীবাণু না ছড়ায়।

মশার উপদ্রব থেকে বাঁচার জন্য কয়েকটি ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে যেগুলো মাধ্যমে খুব সহজেই মশা তাড়ানো যায়। সেই সাথে মশার উপদ্রব থেকে অনেকাংশে বেঁচে যাওয়া যায়।

আমরা কিন্তু মশার কামড় থেকে বাচার জন্যে বিভিন্ন ধরনের,কয়েল, এরোসল, হিটার, স্প্রে ইত্যাদি ব্যবহার করি। আপনি হয়তো জানেন না যে এসব আমাদের শরীরের জন্য কিন্তু খুবই ক্ষতিকর। আর এইসব ক্ষতিকর উপায় মশা তাড়ানোর থেকে প্রাকৃতিক উপায়ে আপনি মশা তাড়াতে পারবেন।

আপনাদের ঘরে যদি প্রচুর পরিমাণে মশা থাকে তাহলে আপনি ঘরোয়া উপায়ে অনেকটাই মশা কমিয়ে ফেলতে পারবেন। অনেকটাই বলার কারণ হলো, দুই একটা মশা যদিও থেকে যাবে কিন্তু আপনার ওই দুই একটা মশাও থাকবে না। যদি আপনি ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো ভালো ভাবে অনুসরণ করেন।

এখন হয়তো ভাবছেন যে ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো কি? মশা তাড়ানোর জন্য আমি ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো আমি নিচে এক এক করে আপনাদেরকে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

 

নারকেলের আঁশ এর ধোয়া

নারিকেলের আশ পোড়ানোর মাধ্যমে মশা তাড়ানোর এই পদ্ধতিটা যিও অনেক পুরনো কিন্তু কার্যকরী। আমাদের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে প্রায়শই দেখা যায় যে নারিকেল নারিকেল আশঁ পোড়ানো মাধ্যমে ধোঁয়া সৃষ্টি করে মশা তাড়িয়ে থাকে।

কিন্তু আপনি জানলে অবাক হবেন যে গ্রামের এই পদ্ধতিটা খুবেই কার্যকরী একটি পদ্ধতি এর মাধ্যমে খুব সহজে মশা তাড়ানো যায়। প্রথমে আপনাকে নারিকেলের আঁশগুলো ভালোভাবে শুকিয়ে টুকরো টুকরো করে রাখতে হবে।

এরপর একটি মাটির হাড়িতে অথবা একটি যে কোন পাত্রে নারিকেলের আঁশগুলো আগুন দিয়ে ধরিয়ে দিতে হবে। আগুন ধরানোর পরে নারিকেলের আজ থেকে প্রচুর পরিমাণে ধোঁয়া সৃষ্টি হবে। আর এই ধর মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি মশা তাড়াতে পারবে না।

 

লেবু ও লবঙ্গ

ঘরোয়া পদ্ধতিতে মনে তাড়ানোর সবচেয়ে সুন্দর একটি পদ্ধতি হলো লেবু ও লবন একসাথে ব্যবহার করে মশা তাড়ানোর উপায় টি। যদি ঘরে লেবু থাকে তাহলে প্রথমে লেবু গুলো টুকরো টুকরো করে প্রতিটা লেবুর ভিতরে ঘরে থাকা লবঙ্গ নিবেন।

ওই লবঙ্গ গুলো প্রতিটা লেবুর টুকরোর ভিতরে কয়েকটা করে গেঁথে গেঁথে দিবেন। এ সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন পুরো লবঙ্গের শুধু মাথাটা বাইরে থাকবে আর বাকি পুরো টা অংশ লেবুর টুকরোর ভেতরে গেঁথে থাকবে।

এরপরে লেবু লবঙ্গের টুকরোগুলো কয়েকটা ভাগে ভাগ করে ঘরের চার কোণায় বাটিতে করে ছড়িয়ে দিবেন। দেখবেন আপনার ঘরে একটা মশাও প্রবেশ করতে পারবেন না। সেই সাথে ঘরে খুবই সুন্দর একটা ঘ্রাণ উপভোগ করতে পারবেন।

 

সুগন্ধি ও আতর 

আপনি জানলে অবাক হবেন যে, মসজিদে হুজুরেরা নামাজ পড়ানোর সময়ে মাঝে মাঝে তাদের মধ্যে অনেকেই মশায় কামড়ায় না। কারণ তারাও শরীরে বিভিন্ন ধরনের আদর সুগন্ধি ব্যবহার করে। আর এই সুগন্ধি আতর গুলোর কারণে তাদেরকে মশায় কামড়ায় না।

আপনি চাইলে আপনার শরীরে আতর অথবা সুগন্ধ জাতীয় কিছু মেখে রাত্রে ঘুমিয়ে পড়তে পারেন। এতে করে দেখবেন আপনাকে কোন মশায় কামড়ে দেয় নি। কেননা মশা গুলো সুগন্ধির ঘ্রান কোনভাবেই সহ্য করতে পারে না।

এছাড়াও চ্যানেলে বিভিন্ন ধরনের যুক্ত লোশন বা ক্রিম ব্যাবহার করেও ঘুমাতে পারেন। এগুলো ব্যবহার করার কারণে আপনি মশা থেকে বা মশার উপদ্রব থেকে খুব সহজে বেঁচে যাবে।

 

রসুন স্প্রে

টাকা দিয়ে স্প্রে কেনার চেয়ে মশা তাড়ানোর সহজ একটি উপায় হল রসুনের স্প্রে করার মাধ্যমে মশা তাড়ানো যায়। প্রথমে একটি বোতলে পানি ভরে নিতে পারেন এরপর সেই পানিতে রসুন থেতলে অথবা রসুনের রস দিয়ে একটু শরবত এর মত তৈরি করতে পারেন।

তারপরে স্প্রে দিয়ে ঘরের প্রতিটা কোনায় কোনায় রসুনের স্প্রে করতে পারেন। ঘরোয়া পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক উপায়ে মশা তাড়ানোর সবচেয়ে সেরা একটি উপায় হল রসুনের রস বের করার মাধ্যমে মশা তাড়ানো যায়।

এখন অনেকে হয়তো বলবেন যে রসুনের যেই দাম এত রসুনের রস কোথায় পাবো। তো তাদের জন্য বলে রাখা ভালো যে রসুনের রস টা শুধুমাত্র আপনার শরীরের বিভিন্ন অংশ মেখে দিলেই মশা আপনাকে কামড়াবে না।

 

শেষ কথা

মশার উপদ্রব থেকে আমরা কমবেশি সবাই দৌড়ের উপরে থাকি। মশা ছোট্ট একটি পতঙ্গ হলেও এর কামড়ে বিভিন্ন ধরনের ভয়ঙ্কর সব রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে মানুষজন মারা যেতে পারে। আমাদের সবারই উচিত মশার কামড় থেকে সবসময় নিজেকে বাঁচানোর উপায় খুঁজে বের করা।

যদিও আমরা বিভিন্ন ধরনের কয়েল, স্প্রে, এরোসেল ইত্যাদি ব্যবহার করে মশা তাড়িয়ে থাকি। কিন্তু এইসব মেডিসিন আমাদের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। যা মশার কামড় থেকে আমাদের যেসব রোগ জীবানু ছড়ায় এর থেকেও বেশি ক্ষয়ক্ষতি বা ক্ষতি হতে পারে।

আর এই জন্য আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করেছি এই বিষয়টি নিয়ে যে ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে কিভাবে মশা তাড়ানো যায়।

আশা করি আপনি মশা তাড়ানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন। যদি আপনি মশা তাড়ানোর উপায় কি সম্পর্কে বুঝতে না পারেন তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে আপনার সমস্যার সমাধান করে দেওয়ার চেষ্টা করব।

আর আপনার কোনো ফ্রেন্ড সার্কেলের বাসায় যদি প্রচুর পরিমাণে মশার উপদ্রব থাকে আর সে যদি সেই মশাগুলো বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর মেডিসিন টাকা দিয়ে ক্রয় করে তাড়িয়ে থাকে। তাহলে তাকে সতর্ক করে দিন এই সব কয়েল, স্প্রে, এয়ারসেল আমাদের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

আর সেই সাথে তার কাছে আমাদের “ঘরোয়া পদ্ধতিতে মশা তাড়ানোর উপায় কি” এই আর্টিকেলটি শেয়ার করতে পারেন। এই আর্টিকেলটি শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার ফ্রেন্ড সার্কেল জানতে পারবে যে কিভাবে টাকা খরচ করে বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান দিয়ে মসা তাড়িয়ে নিজের পরিবারের স্বাস্থ্য ও নিজেকে কতটা ঝুঁকিতে ফেলা হচ্ছে।

আর অন্যদিকে টাকা ছাড়াই ঘরোয়া উপায়ে মশা তাড়ানোর উপায় সমূহ আপনার ফ্রেন্ড সার্কেল এবং তার পরিবার কে সুরক্ষিত রাখতে ভুমিকা পালন করবে।

তো দেখা হবে আবার নতুন কোন আর্টিকেলে নতুন কোনো বিষয় নিয়ে, আশা করি ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

ধন্যবাদ।

 

Updated: March 31, 2022 — 2:30 pm