WiFi কি? ওয়াইফাই কিভাবে কাজ করে

ওয়াইফাই বর্তমানে আমাদের সবার কাছে একটি পরিচিত নাম। যেখানে আমরা মোবাইল সেলুলার নেটওয়ার্ক দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি। সেখানে ওয়াইফাই কে বলা হয়ে থাকে রাজকীয় সম্ভার।

আর এই ওয়াইফাই দিয়ে আমরা বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারি। যেমন আমরা অনলাইনে বিভিন্ন ভিডিও স্ট্রিমিং, অনলাইন বিভিন্ন ধরনের কাজ সম্পাদন, অনলাইনের সমস্ত কাজ, অনলাইনের মাধ্যমে একেকটা ফাইল ডাউনলোড অথবা আপলোড ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারি।

তবে বর্তমানে ওয়াইফাই দিয়ে সবচাইতে বেশি কাজটি করা হয়ে থাকে সেটা হলো ঘরে অথবা অফিসে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজ। আমরা অফিসে গেলে সবচাইতে বেশি পরিমাণ ওয়াইফাই কানেকশন দেখতে পাই। সেখানে অফিসের বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করার জন্য ওয়াইফাই কানেকশন এর প্রয়োজন পড়ে।

ওয়াইফাই এর মাধ্যমে অনেকগুলো কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ডিভাইসকে একসাথে একটার সাথে অন্যটা যুক্ত করা যায়। এক্ষেত্রে ওয়াইফাই কে বলা যায় ওয়ারলেস সিগনাল সিগনাল। যেটার মাধ্যমে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজে পরস্পরের সাথে সংযুক্ত হয়।

ওয়াইফাই প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কাজে একটার সাথে অন্যটা যুক্ত হয়ে বিভিন্ন তথ্য একজনের সাথে অন্যজনের কম্পিউটারের তথ্য আদান প্রদান করতে পারে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে ওয়াইফাই কে একটি ওয়ারলেস টেকনোলজি বলা যেতে পারে। কেননা ওয়াইফাই সাধারণত কোন ধরনের তারের সংযোগ ছাড়াই এ কম্পিউটারের সাথে অন্য কম্পিউটারে সংযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হয়।

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছো সবাই, আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। তো আজকে আমাদের সাথে আলোচনা করতে যাচ্ছি ওয়াইফাই কি ওয়াইফাই কিভাবে কাজ করে এবং ওয়াইফাই এর প্রকারভেদ ইত্যাদি সম্পর্কে।

আপনি যদি ওয়াইফাই সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনি ওয়াইফাই সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবে। চলুন শুরু করা যাক এবং সেইসাথে জেনে নেওয়া যাক ওয়াইফাই এর সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য।

ওয়াইফাই কি?

১৯৭১ সালে ALOHANet নামে ওয়াইফাই ডেভেলপ করা হয় হাওয়াই ইউনিভার্সিটিতে।

ওয়াইফাই এর পূর্ণ নাম হল ওয়ারলেস ফিডেলিটি (wireless fidelity)। ওয়াইফাই কে টেকনোলজি প্রযুক্তি কে বলা যায়। ওয়াইফাই এর সাহায্যে ওয়ারলেস নেটওয়ার্ক টেকনোলজির মাধ্যমে একটি কম্পিউটারের সাথে অন্য কম্পিউটারে বিভিন্ন তথ্য আদান-প্রদান করা যায়।

ওয়াইফাই এর কানেকশন এর মাধ্যমে ঘরে বসে এবং অফিসের বিভিন্ন ধরনের ইন্টারনেটভিত্তিক কাজগুলো সম্পাদন করা হয়ে থাকে

WiFi কিভাবে কাজ করে?

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা জানেনা যে ওয়াইফাই কিভাবে কাজ করে। আর জানলেও তাদের ধারণা খুবই কম। যদি আপনি জেনে থাকেন তাহলে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। আর যদি আপনি না জানেন যে, কিভাবে ওয়াইফাই কাজ করে তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ওয়াইফাই কিভাবে কাজ করে।

ওয়াইফাই বিভিন্ন ডিভাইস গুলোর মধ্যে নানান ধরনের তথ্য আদান প্রদান করে। আর এই যে প্রক্রিয়ার চলতেই থাকে এটাকে বলা হয় নেটওয়ার্ক রেডিও তরঙ্গ।

ওয়াইফাই কানেকশন এর জন্য একটি ওয়ারলেস এডাপ্টার প্রয়োজন হবে। যদি আপনি স্মার্ট ফোন, ল্যাপটপ বা কম্পিউটার এর মাধ্যমে ওয়াইফাই ব্যবহার করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার একটি ওয়ারলেস এডাপ্টার এর প্রয়োজন পড়বে।

এছাড়া যদি আপনি চান আপনার কম্পিউটারের সাথে ওয়ারলেস এডাপ্টার লাগাতে পারেন। আর এই এডাপ্টার লাগানোর মূল কারণ হলো নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য গুলোকে রেডিও সিগন্যাল পাঠানো। আর এই কারণেই সবসময় বলা হয়ে থাকে যে ওয়াইফাই ওয়ারলেস ডিভাইস এর মত কাজ করে থাকে।

ওয়াইফাই এই রেডিও সিগন্যাল পাঠানোর জন্য রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি এর ব্যবহার করে সংযুক্ত থাকা কম্পিউটারাইজড গুলোর মধ্যে সিগন্যাল পাঠায়। আবার সেই সিগন্যাল গুলোকে এন্টেনার এর মাধ্যমে ডিকোডার করা হয়।

ডিক্লেয়ার করা হয় যেটার সাহায্যে সেটা কে আমরা রাউটার নামে চিনে থাকে। এই রাউটার সাধারণত সিগনাল গুলোকে রিপোর্ট করে সেই ধরনের এটার্নাল কানেকশন এর সাথে ইন্টারনেটের কাছে পাঠায়।

ওয়াইফাই এর সুবিধা গুলো কি কি?

বর্তমানে আপনি যদি বলেন ওয়াািফাইয়ে সবচেয়ে সেরা সুবিধাটা কি তাহলে আমি বলবো ভিডিও স্ট্রিমিং। ওয়াইফাই এর মাধ্যমে হাই রেজুলেশনের ভিডিও স্ট্রিমিং দেখা যায় এবং ভিডিও স্ট্রিমিং ও করা যায়। সেই সাথে আপনি চাইলে ওয়াইফাই কানেকশনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের অনলাইনে কাজ সম্পাদন করতে পারবেন।

তাছাড়া আপনি যদি একজন স্টুডেন্ট হন তাহলে সবচেয়ে সেরা একটি উপায় আপনার ইন্টারনেট ব্রাউজিং করা যেতে পারে ওয়াইফাই কানেকশনের মাধ্যমে। আর আপনি যদি কোন চাকরিজীবী হন তাহলে আপনার ওয়াইফাই সুবিধা হল অফিসের বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করা সহ বিভিন্ন ধরনের কাজ খুব সহজে করা যায়।

ওয়াইফাই কানেকশনের মাধ্যমে কাজ করে এবং সুবিধাগুলো পাবেন তা কখনো সেলুলার নেটওয়ার্কে পাবেন না। এছাড়াও চাইলে আপনাদের ঘরে যেই স্মার্ট টিভি গুলো আছে সেগুলোর মাধ্যমে ওয়াইফাই কানেকশন করে খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া ও ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে বিভিন্ন ভিডিও স্ট্রিমিং সহ টিভি অ্যাপ সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারবেন।

তো আমাদের মত যারা আছে তারা সবচাইতে বেশি যে কাজটি করে ওয়াইফাই কানেকশনের মাধ্যমে সেটা হল বিভিন্ন ধরনের মুভি দেখা। এছাড়াও অনলাইন বিভিন্ন ধরনের গেমস রয়েছে সে গেমস গুলো ওয়াইফাই এর মাধ্যমে খেলে থাকি। কেননা ওয়াইফাই কানেকশন গেমস এবং মুভি গুলো দেখতে খুবই ভালো লাগে।

তাছাড়া ওয়াইফাই রাউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনেক গুলো স্মার্টফোন একসাথে কানেকশন করে ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে পারে। এছাড়া আরো অনেক ধরনের সুবিধা রয়েছে ওয়াইফাই কানেকশনের যা যা আপনি সেলুলার নেটওয়ার্ক পাবেন না। তাছাড়া সবচাইতে বড় যেই সুবিধাটা পাবেন ওয়াইফাই কানেকশনে সেটা হল টাকা সাশ্রয়।

আপনি মাসে যত পরিমাণ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন না কেন ওয়াইফাই কানেকশনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৫০০ – ১,০০০ টাকা মাসে খরচ পড়বে। আর অন্যদিকে আপনি যদি সেলুলার নেটওয়ার্ক টাকা দিয়ে ইন্টারনেট ব্রাউজ করেন। তাহলে সেখানে আপনাকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ মেগাবাইট দেওয়া হবে। যে মেগাবাইট শেষ হয়ে গেলে আবার আপনাকে মেগাবাইট কিনে ইউজ করতে হবে।

আর ওয়াইফাই এর মাধ্যমে আনলিমিটেড ডাটা পাবেন। এজন্যে সব চাইতে বেশি সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায় ওয়াইফাই কানেকশন এর মাধ্যমে।

WiFi চালাতে কি কি লাগে?

ওয়াইফাই সম্পর্কে সবকিছু জানার পর এখন হয়তো আপনার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে যে ওয়াইফাই চালাতে কি কি প্রয়োজন। আপনি যদি না জেনে থাকেন যে ওয়াইফাই চালাতে কি কি প্রয়োজন তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক।

ওয়াইফাই চালাতে যা যা প্রয়োজন প্রয়োজন পড়বে।
আপনি যদি ওয়াইফাই ব্যবহার করতে চান, তাহলে আপনার যা যা প্রয়োজন হবে তা হলো

১. মডেম (Modem),
২. রাউটার (Router)
৩. ওয়ারলেস এডাপ্টার (Wireless adapter)
৪. সরাসরি সংযোগ (Wifi Connection)

এই কয়েকটি জিনিস আপনি বাজার থেকে ক্রয় করতে পারবেন। বাজার থেকে ক্রয় করার পর আপনি খুব সহজেই ওয়াই ফাই ব্যবহার করতে পারবেন।

প্রথমে আপনি মডেম এবং রাউটার দুটি একই কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। এক্ষেত্রে যদি চান তাহলে আপনাকে আলাদা আলাদা করে ওয়াইফাই রাউটার এবং মডেম ক্রয় করতে হবে না।

আমার মনে হয় এখন আপনিই জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন যে ওয়াইফাই ব্যবহার করতে কি কি প্রয়োজন হয়।

শেষ কথা

তো বন্ধুরা আজকের এই আর্টিকেল থেকে আমরা জানতে পারলাম ওয়াইফাই কি। এছাড়াও আমরা আরো জানতে পারলাম ওয়াইফাই কিভাবে কাজ করে। আবার আরও জানতে পারলাম ওয়াইফাই এর সুবিধা গুলো কি কি। সর্বশেষ আমরা যে বিষয়টি জানতে পারলাম সেটা হলো ওয়াইফাই ব্যবহার করতে কি কি প্রয়োজন হয়।

আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন যে ওয়াইফাই কি ওয়াইফাই ব্যবহার করতে কি কি প্রয়োজন ইত্যাদি বিষয়গুলো। এখন আপনি খুব সহজেই ওয়াইফাই ব্যবহার করতে পারবেন। এর পরও যদি আপনি ওয়াইফাই সম্পর্কে কোন কিছু বুঝতে না পারেন তাহলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন আমরা

আমরা খুব শীঘ্রই আপনার সমস্যার সমাধান করে দেয়ার চেষ্টা করব। আপনার কোন বন্ধু বান্ধব যদি ওয়াইফাই সম্পর্কে জানতে চায় তাহলে তার সাথে আমাদের এই আর্টিকেলের শেয়ার করতে পারেন। এতে আপনার বন্ধু বান্ধব বা আত্মীয় স্বজন ও ওয়াইফাই সম্পর্কে জানতে পারবে।

আজকের মতো এই পর্যন্তই ছিল, দেখা হবে আবার নতুন কোন আর্টিকেলে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। আশা করি ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন
ধন্যবাদ।

 

Updated: April 8, 2022 — 10:58 pm