ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করার উপায়

 

ইউটিউব, ডিজিটাল বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত সোশ্যাল মিডিয়াগুলোর একটি। ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত কিন্তু একটি বার ও ইউটিউব ব্যবহার করেন নি এমন ব্যাক্তি খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। ২০০৫ সালের মে মাসে পরীক্ষামূলক ভাবে চালু হয় সাইটটি। তার পর থেকেই যেন ঝড়ের গতিতে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। একই বছরের ডিসেম্বর মাসে আনুষ্ঠানিক ভাবে তার কার্যক্রম শুরু করে ইউটিউব। ততদিনেই তার দৈনিক ভিডিও ভিউ ২০ লাখের কোঠা ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে দর্শকের সংখ্যা বিবেচনায় এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম সাইট। এ ক্ষেত্রে তার স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান Google এর পরেই ইউটিউবের স্থান। অপর দিকে সামাজিক মাধ্যম হিসেবেও এটি রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। ফেসবুকের ঠিক পরেই। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৮ বছরের বেশি বয়ষ্ক কোন ব্যাক্তি গড়ে দৈনিক ৪০ মিনিটেরও বেশি ইউটিউব ব্যবহার করেন। দৈনিক হিসেবে সারা বিশ্বজুড়ে সেই হিসাবটি দাঁড়ায় ২ বিলিয়ন অর্থাৎ ২০০ কোটি ঘন্টায়। এটি একটি অবিশ্বাস্য সংখ্যা বটে।

 

আর ঠিক সেজন্যই ইউটিউব হয়ে উঠেছে অসাধারণ একটি আয়ের মাধ্যম। যেহেতু এটি বিশ্বের দ্বিতীয় দর্শকসমৃদ্ধ সাইট সেহেতু অতি সহজেই এখানে আপনি আপনার প্রচার প্রসারণ চালাতে পারেন। প্রতিদিন বিশ্বে লক্ষ লক্ষ ইউটিউবার অসংখ্য ভিডিও আপলোড দিচ্ছে এবং আয় করছে লক্ষ লক্ষ টাকা। অনেকে ইউটিউবিং কে বেছে নিয়েছে মূল পেশা হিসেবেই। চাইলে আপনিও হতে পারেন তাদের মতো। কিন্তু কিভাবে হবেন সেই উত্তর নিয়েই আজকের এই লেখাটি। 

 

অনলাইনে ঘরে বসে আয় করার অনেক উপায় আছে। আপনার যদি ইচ্ছা থাকে তাহলে ঘরে বসেই খুব সহজে কিছু টাকা ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করতে পারবেন। সম্প্রতি সময়ে অনলাইন থেকে টাকা আয় করার মাধ্যম গুলোর মধ্যে সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ইউটিউব। কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়া শুধুমাত্র ভিডিও আপলোড করে ইউটিউব চ্যানেল থেকে টাকা আয় করা যায়। আপনি সামান্য চেষ্টা করলে খুব সহজে YouTube চ্যানেল থেকে টাকা আয় করতে পারবেন।

 

ইউটিউব থেকে আয় কারা করতে পারবে?

 

ইউটিউব থেকে ইনকাম কি সবাই করতে পারবে? তার সোজা উত্তর হলো “না”। সবাই এই প্ল্যাটফর্মে আয় করতে পারবে না শুধুমাত্র Content Creators রাই পারবে অর্থাৎ যারা ভিডিও তৈরি করে। যারা ইউটিউব এ নানা বিষয় সম্পর্কিত ভিডিও বানায় তারাই Content Creator।

 

প্রোডাক্ট বিক্রি করে ইউটিউব থেকে আয়

 

বিভিন্ন পণ্য বিক্রি বর্তমানে ইউটিউবারদের ও পাবলিক ফিগারদের আয়ের অন্যতম উৎস হয়ে উঠছে। আপনার চ্যানেলের যদি যথেষ্ট পরিমাণ ফ্যান ফলোয়িং থাকে, যারা আপনার কাছ থেকে কিনতে আগ্রহী হবে, সেক্ষেত্রে ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবদের কাছে বিক্রি করতে পারেন মার্চেন্ডাইজ।আপনার ইউটিউব চ্যানেলও যেহেতু একটি ব্র্যান্ড, সেক্ষেত্রে  বিক্রি হওয়া মার্চেন্ডাইজ এ নিজস্বতা রাখার চেষ্টা করুন। এর ফলে চ্যানেল হিসেবে আপনার প্রোমোশন হবে ফ্রিতেই।

 

ভিডিও এডিটিং সার্ভিস দিয়ে আয়

আপনি যেহেতু ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করবেন, সেক্ষেত্রে ভিডিও এডিটিংয়ে পারদর্শীতা থাকার কথা। আপনি যদি মনে করেন আপনার ভিডিও এডিটিং অন্যদের চেয়ে ভালো ও আপনি এই কাজে পারদর্শী, সেক্ষেত্রে আপনি ভিডিও এডিটিং সার্ভিস প্রদান করতে পারেন।

অর্থের বিনিময়ে ভিডিও এডিটিং সার্ভিস প্রদান করতে পারেন অন্য ইউটিউবারদের। এছাড়াও বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মেও ভিডিও এডিটিং এর কাজ করে ভালোই আয় করা যায়।

 

অনলাইন কোর্স বিক্রি করে ইউটিউব থেকে আয়

আপনি যদি কোনো শিক্ষামূলক ইউটিউব চ্যানেল চালান, সেক্ষেত্রে আপনি যা শেখান তার সেরাটা দিয়ে তৈরি করতে পারেন অনলাইন কোর্স। এছাড়াও আপনার ভিডিও এর কোনো নির্দিষ্ট ব্যাপার যদি ভিউয়াররা শিখতে ইচ্ছুক হয়, সেক্ষেত্রে অনলাইন কোর্স সেল করা হতে পারেন ইউটিউব থেকে আপনার আয়ের একটি উৎস।

ইউটিউব মনিটাইজেশনঃ

 

ইউটিউব এর নতুন পলিসি অনুসারে ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজ করার জন্য আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার ও এক বছরে ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম থাকতে হবে। অতএব ইউটিউবে এক বছরে মিনিমাম ৪০০০ ঘন্টা ভিডিও ভিউ হওয়ার পর আপনি ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজেশন করে ইউটিউব থেকে টাকা আয় করা শুরু করতে পারবেন। তবে গত ২০১৯ সালের পূর্বে ইউটিউব ভিডিও মনিটাইজ করার জন্য কোন ধরা বাধা নিয়ম ছিল না। কিন্তু ইউটিউব ২০১৯ সালে তাদের প্রোগ্রাম পলিসি আপডেট করে।

শেষ কথাঃ

যেহেতু YouTube হচ্ছে Google কোম্পানির একটি অংশ, সুতরাং আপনি চাইলে এখান থেকে আপনার পরিশ্রম কাজে লাগিয়ে বিশ্বস্ততার সাথে ইউটিউব থেকে টাকা আয় করতে পারেন। এর সব চাইতে বড় সুবিধা হচ্ছে আপনাকে কোন প্রকার Domain ও Hosting কোনটাই কিনতে হচ্ছে না। তাছাড়া YouTube এর মাধ্যমে খুব সহজেই Google AdSense অনুমোদন পাওয়া যায়। কাজেই আমার মনেহয় এটিই হচ্ছে অনলাইন থেকে টাকা আয় করার সবচেয়ে সহজ, ফ্রি এবং বিশ্বস্ত একটি উপায়।

 

Updated: April 30, 2022 — 8:28 am